ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বৈশ্বিক উদ্যোগ জরুরি বাড়ছে অনাহারে মৃত্যু
Published : Friday, 23 September, 2022 at 12:00 AM
বৈশ্বিক উদ্যোগ জরুরি বাড়ছে অনাহারে মৃত্যুজলবায়ু পরিবর্তন, দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারির প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নিন্দনীয় চেষ্টাসহ নানা কারণে কোটি কোটি মানুষ আজ ক্ষুধার্ত। না খেতে পেয়ে প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে ১৯ হাজার ৭০০ মানুষের। অর্থাৎ গড়ে প্রতি চার সেকেন্ডে ক্ষুধায় একজন করে মানুষ মারা যাচ্ছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে ৭৫টি দেশে কর্মরত ২৩৮টি বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও।
খোলা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বে বর্তমানে সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ তীব্র ক্ষুধা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে বলেই সতর্ক করা হয়েছে খোলা চিঠিতে।
প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে আসছে সোমালিয়া, ইয়েমেনসহ অনেক দরিদ্র দেশের কঙ্কালসার শিশুদের ছবি। খবরে এসেছে, আফগানিস্তানে ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ শিশুদের বিক্রি করে দিচ্ছে। কেউ কেউ নিজের বা পরিবারের সদস্যদের কিডনি বিক্রি করছে। বেঁচে থাকার জন্য কিংবা একটু উন্নত জীবনের জন্য বহু মানুষ দেশান্তরি হচ্ছে। পথে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। প্রতিবছর ভূমধ্যসাগরে শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রাণ যাচ্ছে। অনেকে ক্রীতদাসের জীবন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ দেশে দেশে এখনো জ্বলছে যুদ্ধের আগুন। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান দীর্ঘদিন ধরে সেই আগুনে পুড়েছে। দলগত সংঘাতে জীবন যাচ্ছে ইয়েমেন, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়াসহ আরো অনেক দেশে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগুন দ্রুতই নিভবে বলে মনে হয় না। নতুন করে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা চলছে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে। বৃহৎ শক্তিগুলোর অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার কারণে হোঁচট খাচ্ছে বিশ্ববাণিজ্য। দেশে দেশে মুদ্রাস্ফীতি এতটাই বাড়ছে যে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই তলানিতে নামছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাও আসন্ন। আর তারও করুণ পরিণতি ভোগ করবে দরিদ্র দেশগুলোর নিরুপায় দরিদ্র মানুষ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও আফ্রিকার অনেক দেশে খাদ্যসংকট চরম রূপ নিয়েছে। একদিকে খরা, অন্যদিকে বন্যা-খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিশ্বনেতারা কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। অথচ অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ না করেও নানাভাবে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে দরিদ্র দেশগুলো। বাংলাদেশের বিশাল উপকূলীয় অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা আশা করি, এনজিওগুলোর খোলা চিঠির বক্তব্য বিশ্বনেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।
খাদ্যসংকটসহ বর্তমান বিশ্বের সংকটগুলো মোকাবেলায় বিশ্বনেতৃত্বকে আরো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে। জাতিসংঘকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। আমরা চাই, অনাহারে মৃত্যুর দ্রুত অবসান হোক।