একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মোজাম্মেল হক
Published : Monday, 19 September, 2022 at 12:00 AM
একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডসের প্রবাসী সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রপ-বাসুগ’, ‘প্রজন্ম ৭১’ ও ‘আমরা একাত্তর’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিচালিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দীর্ঘ ৫১ বছরেও আদায় হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২৫ মার্চকে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করেছে।’’ তিনি এই দিবসটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ারও আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫ হাজার মানুষকে হত্যা করে। পৃথিবীতে এত স্বল্প সময়ে এত বেশি সংখ্যক মানুষ হত্যার রেকর্ড নেই। এরপর দীর্ঘ ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। সারা দেশে ব্যাপক লুটতরাজ চালিয়েছে। দুই লাখ মাবোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। তাই ওই গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ৯ ডিসেম্বরের পাশাপাশি ২৫ মার্চকেও আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণা দিতে হবে। জাতিসংঘের কাছ থেকে এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সেই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিচার শুরু করে। রাজাকার-আলবদরদের তালিকা তৈরির জন্য সংসদে আইন পাস হয়েছে।’ এসময় মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দলগুলোর নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন বাতিল করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী হিলাল ফয়েজী। তিনি বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করছে। যে কাজের কারণে প্রবাসীদের সহায়তায় এ বছর অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ৩ নম্বর এজেন্ডা হিসেবে বাংলাদেশের জেনোসাইডের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর ‘জেনোসাইড স্বীকৃতি আদায় সপ্তাহ’ ঘোষণা করা হয়। এই সপ্তাহকে সামনে রেখে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন— গণহত্যা বিশেষজ্ঞ ও শহীদ সন্তান প্রদীপ কুমার দত্ত, প্রজন্ম ৭১-এর সভাপতি আসিফ মুনীর প্রমুখ।