স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, কুমিল্লা ও বনানীতে বিএনপি নেতাদের উপর হামলায় দলের অতি উৎসাহী কোনো সদস্য দায়ী থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কালকে কুমিল্লার ঘটনায় বিএনপির এক সিনিয়র নেতা আহত হয়েছেন। আমরা সেটা শুনেছি ইতিমধ্যে তদন্তের ব্যবস্থা করেছি। কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন সেটা দুই রকমভাবে শুনেছি। যেহেতু আমি শুনেছি তাই তদন্তের আগে কিছু বলতে পারব না।’
‘আমি এতকুটু বলতে পারি যদি কেউ এ ব্যাপারে অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করে থাকেন কিংবা কেউ যদি ঘটনাটা ঘটিয়ে থাকেন ইচ্ছা করে, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ তিনি বলেন।
বানানীর ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বনানীর যে ঘটনা সেটা না জেনে আমি বলতে পারব না। সেটা আমি আগেই বলেছি। ঘটনাটির সমস্ত কিছু জেনে আরেকদিন ব্রিফ করবো আপনাদের। কেন এসব ঘটছে, কীভাবে ঘটছে, না জেনে আপনাদের কাছে বলা উচিৎ না।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আপনারা বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি মাঠে ময়দানে হঠাৎ করেই দেখছেন। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। এর পাশাপাশি আমাদের দেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল রয়েছে। তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা রয়েছে। আমাদের সরকার সব সময় বলেন, তারা গঠনতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের বলার কিছু থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার মনে করে সব রাজনৈতিকদলই সমানভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। কিন্তু সবাইকে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। যখন কেউ ভাঙচুর করবে, রাস্তা অবরোধ করবে, কিংবা জনমালের ক্ষতি করবে বা জ্বালাও পোড়াও করবে তখনই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব তারা পালন করবে। সেটা তারা করছে বলে বিশ্বাস করি।’
রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে কি নির্দেশনা রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা (সহিংসতা) দুই দলের ক্ষেত্রেই হচ্ছে ৷ আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কাজেই একদল মার খাচ্ছে আর একদল ঘরে বসে আছে সেটা কিন্তু নয়। পাল্টা পাল্টি ঘটনা হচ্ছে, মুখোমুখি হচ্ছে।
কেন হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলেছেন, সবারই রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। তবে যারা রাজনৈতিক দল তারা যদি নিয়ম মেনে রাজনীতি করে, রাজনৈতিক কর্মসূচি যদি পালন করে। আমাদের সেখানে কিছু বলার নেই। যার যার কর্মসূচি নিয়ে কাজ করবে। কিন্তু সেটা বিধি সম্মত হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলেছি সভা সমিতি করলে আমাদের কিছু বলার নেই। যদি সভা সমিতি ছেড়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখনই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যায়। তার আগে কোন খানেই নিরাপত্তা বাহিনী যাচ্ছেন না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লা যে ঘটনাটি ঘটেছে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে ছুটে গেছে। এ সমস্ত ঘটনাগুলোর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যা করার করছে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সংঘাত শুরু হয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় রয়েছে অনেক। তবে এখানে কার কি উদ্দেশে এগুলোতো আমরা পর্যবেক্ষণ না করে বলতে পারব না। অনেকেরই অনেক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। আমি সব সময় বলি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করে। কোনো ষড়যন্ত্র, কোনো বন্ধুকের নল এগুলো আমরা বিশ্বাস করি না।
আমরা মনে করি, সামনে নির্বাচন আসছে সে নির্বাচনে আবার যদি প্রধানমন্ত্রীকে জনগণ ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেন তাহলে তিনি আসবেন। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র করে, কিংবা ভয়ভীতি দেখিয়ে বা কোন পেশিশক্তি ব্যবহার আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। তবে যারা এগুলো করবেন তাদের জন্য অশুভ সংবাদ হলো তারা যদি এগুলো থেকে বিরত না থাকেন তাহলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।