
রণবীর
ঘোষ কিংকর: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনায় লং ভেহিক্যাল
(লরি) উল্টে দিনভর যানজটের কবলে পড়েন যাত্রী ও গাড়ি চালকরা। দীর্ঘ ওই যানজট
মহাসড়কের অন্তত ৪০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তার করে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে
ওই মহাসড়কে চলাচলরত গাড়ি চালক ও যাত্রীরা।
বুধবার (২৭ জুলাই) দিনগত রাত
২টায় মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় ঢাকামুখী লেনে লরি উল্টে
মহাসড়কে পড়ে থাকার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিনভর ওই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে
বিদেশগামী যাত্রী, রোগী, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবীসহ লক্ষ লক্ষ মানুষকে। এ
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (রাত ৮টা) দাউকান্দি টোল প্লাজা এলাকায়
যানজট চলছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাত ২টায় ঢাকামুখী একটি লরি মহাসড়কের
নূরীতলা এলাকায় হঠাৎ উল্টে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতের
বেলা ওই দুর্ঘটনায় নূরীতলা থেকে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ
হয়ে যায়। হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষকি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায়
ক্রমশই ওই যানজট দীর্ঘ হয়ে কয়েক কিলোমিটার ছড়িয়ে পড়ে। সকাল পর্যন্ত ওই
যানজট ময়নামতি সেনা নিবাস এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে এতে শুধুমাত্র ঢাকামুখী
লেনেই ১৫ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
অপরদিকে, সকাল পর্যন্ত যানজট আটকে
থেকে অনেক যানবাহন উল্টোপথে (চট্টগ্রামমুখী লেনে) চলাচল শুরু করায় এবং
বৃহস্পতিবার তুলনা মূলক যান চলাচল বেশি থাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনেও যানজট
সৃষ্টি হয়। সৃষ্ট ওই যানজট গৌরীপুর থেকে চান্দিনা পর্যন্ত গড়ায়।
এদিকে,
রাতে মহাসড়কে উল্টে যাওয়া লরি সরাতে হাইওয়ে পুলিশের সময় লেগেছে অন্তত সাত
ঘন্টা। সকাল ৮টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত ওই লরি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেয় হাইওয়ে
পুলিশ। ততক্ষণে যানজট দীর্ঘ হয়ে অন্তত ৪০ কিলোমিটার ছড়িয়ে পড়ে।
ফেনীর
সোনাগাজী থেকে ছেড়ে আসা বিদেশগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানান, বিকাল সোয়া
৪টায় আমার ফ্লাইট। সকাল ৬টায় বাড়ি থেকে রওয়ান হয়েছি। সকাল ৮টার দিকে
নাজিরাবাজার এলাকায় এসে যানজটে আটকাই। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থেকে
এখন দুপুর দেড়টা বাজে এখনও চান্দিনা অতিক্রম করতে পারিনি। বিমান বন্দরে
পৌঁছবো কখন?
সাজ্জাত হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, আমার আত্মীয়
মারাত্মক অসুস্থ। কুমিল্লা থেকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। সকাল ৯টায় কুমিল্লা
থেকে রওয়ান হয়ে এখনও হারিখোলায় আটকে আছি!
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বাস
চালক মিজান জানান, সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে কুমিল্লায় পৌঁছেছি ৯টায়।
আর কুমিল্লা থেকে ইলিয়টগঞ্জ পৌঁছতে সময় লেগেছে সময় লেগেছে সাড়ে ৪ ঘন্টা!
হাইওয়ে
পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (এস.আই) প্রেমধন মজুমদার জানান, আমার
ফাঁড়িতে যে র্যাকার আছে তাতে এতোবড় লরি উঠানো সম্ভব হয় না। পরবর্তীতে
কুমিল্লা থেকে ক্রেন এনে ওই লরি সরাতে হয়েছে। ততক্ষণে যানজট তীব্র হয়।
এদিকে, দুর্ঘটনা পরপরই আমাদের হাইওয়ে পুলিশ রাত থেকে নিরলস চেষ্টা করে
যানজট কমিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।