
জহির শান্ত:
কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে
উঠেছে নগরী। গণসংযোগ, মিছিল, মাইকিংয়ে কুমিল্লাজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।
পোস্টারে-পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে নগরী। তবে প্রচরণা শুরুর দ্বিতীয় দিনেই
অভিযোগ উঠেছে, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক
সাক্কুর নির্বাচনি পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। আর আচরণ বিধি
ভঙ্গের দায়ে জরিমানা গুণতে হয়েছে দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক
রিফাত ও নিজাম উদ্দিন কায়সারকে।
আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে
ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক
প্রচারণা। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শনিবার
সকাল থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েন মেয়র প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। সকাল
১০টায় নগরীর বাদুরতলা থেকে কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে বিশাল মিছিল-শোডাউন
করেন ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। মিছিল
নিয়ে কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, চকবাজার হয়ে সালাউদ্দিন মোড় পর্যন্ত গণসংযোগ
করেন তিনি। কিন্তু তা মিছিলে যোগ দিতে আসা একদল সমর্থক সাথে নিয়ে আসেন একটি
ঘোড়া। এতেই বাঁধে বিপত্তি। জীবন্ত প্রাণী নিয়ে প্রচারণার অভিযোগে কায়সারকে
৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাসরিন সুলতানা নিপা।
তিনি জানান, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী প্রচারনায় জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করায়
তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে টাকা আদায় করা হয়।

ঘোড়া প্রতীকের প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। আমার সমর্থকরা আমাকে না জানিয়ে ঘোড়া নিয়ে আসে।
এসময় তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত বলেন, এই কুমিল্লাকে লুটেরা শ্রেণির হাত থেকে মুক্ত করতে মানুষ আমাকেই বেছে নিবে।
বেলা
সাড়ে ১১টার দিকে প্রচারণায় নামেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী
মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। নগরীর কাপরিয়া পট্টি, দেশ ওয়ালী পট্টি ও কান্দিরপাড়
এলাকায় গণ সংযোগ করেন তিনি। এসময় সাক্কু তার নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানার
ছিঁড়ে ফেলা এবং প্রচার মাইকে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেন। তিনি বলেন,
শুক্রবার রাতে ১ নং ওয়ার্ডের বিষ্ণুপুর এলাকা থেকে মাইকিং করে ফেরার পথে
ফৌজদারি এলাকায় একটি ছেলে আমার প্রচার মাইকে হামলা চালায়। পরে গভীর রাতে
কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে মুখোধারী দুর্বৃত্তরা রাজগঞ্জ, দেশওয়ালী পট্টি,
চকবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। বিষয়টি আমি
রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
সাক্কু বলেন, আমার জনপ্রিয়তায়
ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ করব এই বিষয়ে ব্যবস্থা
নিতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা
শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, অভিযোগটি আমরা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসময় তিনি সবাইকে বিধি মেনে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর আহবান জানান।
অপরদিকে
দুপুর টা থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের নৌকা প্রতীকের
পক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন আওয়ামী লীগ ও
অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিন প্রচারণায় পরিবহনে পোস্টার সাঁটানোর
দায়ে নৌকার প্রার্থীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
নাসরিন সুলতানা নিপা।
এর আগে বেলা ১১ টায় কুমিল্লা কান্দিরপাড় রামঘাটস্থ
মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোয়া নিতে ঢাকায় চলে যান রিফাত।
ঢাকায়
যাওয়ার পূর্বে রিফাত সাংবাদিকদের বলেন, আমি সভানেত্রীর দোয়া নিতে ঢাকায়
যাচ্ছি। আমি আমার কুমিল্লার নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করেই ঢাকায় যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নির্বাচন আসলে ‘বহিষ্কার গেইম’ খেলে। এটা তাদের কৌশল। তবে জনগণ তাদের সাথে নেই। জনগণ নৌকাকেই ভোট দিবে।