ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করুন পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে
Published : Wednesday, 11 May, 2022 at 12:00 AM
দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করুন পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছেসারা দেশেই বাড়ছে খুনের ঘটনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে তুচ্ছ কারণে পারিবারিক সহিংসতা। সেই সঙ্গে আছে সামাজিক, অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক কারণে খুনাখুনির ঘটনা। আছে ধর্ষণ ও ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যা।
সংবাদপত্রে গত দুই দিনে এমন অনেক খুনের ঘটনার খবর এসেছে, যেগুলো সুস্থ মানসিকতাসম্পন্ন যেকোনো মানুষের জন্য চরম পীড়াদায়ক। তাদের একটাই প্রশ্ন, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ আছে কি? থাকলে এসব ঘটনা এভাবে বাড়ছে কেন?
প্রকাশিত এসব খবর থেকে জানা যায়, গত রবিবার ভোরে মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক নারী ও তাঁর দুই মেয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, পারিবারিক বিরোধের কারণে ওই নারীর স্বামী তাদের হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। গত শনিবার রাতে চাঁদা না দেওয়ায় চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে এবং সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১ শতাংশ জমির বিরোধে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যৌতুক দিতে না পারায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ভবানীপুরে বিয়ের মাত্র পাঁচ মাস পর শনিবার ভোরে গৃহবধূ সোনিয়া বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পারিবারিক কলহের কারণে গত শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুরে তিন সন্তানের জননী জুলিয়া খাতুনকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁর মাদকাসক্ত স্বামী। পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ভগ্নিপতির লাঠির আঘাতে বড় শ্যালকের মৃত্যু হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশায় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে গত বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন গোপাল মণ্ডল। শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নে এক কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বগুড়ার গাবতলীতে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তদের ছোড়া এসিডে ঘুমন্ত অবস্থায় তিন মাসের শিশুসহ তিনজন দগ্ধ হয়েছে। গত তিন দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে এক ডজনের বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো কি কোনো সুস্থ সমাজের প্রতিচ্ছবি?
সন্ত্রাস, রাহাজানি ও খুনাখুনির ঘটনা সারা দেশেই জনমনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কথায় কথায় ঘটছে খুনাখুনির ঘটনা। বাড়ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়িয়েছে পুলিশের সঠিক ভূমিকার অভাব। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শিগগিরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাঁরা মনে করেন, বিচার বিলম্বিত হওয়া, তদন্তে ঘাটতি, সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবসহ নানা কারণে অনেক অপরাধী অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়। এটিও সমাজে অপরাধ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ।
আমরা চাই, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। যৌতুক, এসিড নিক্ষেপসহ খুনাখুনির প্রতিটি ঘটনার বিচার দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হোক। প্রয়োজনে বিচারব্যবস্থার সম্প্রসারণ করতে হবে। সারা দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।