
রণবীর
ঘোষ কিংকর: দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ি
থামিয়ে পথচারীদের মহাসড়ক পারাপারে কুমিল্লার চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন
এলাকায় যানজট এখন নিত্য সঙ্গী। ওই স্টেশন এলাকায় দিনের বেলায় এমন কোন
মুহুর্ত নেই যে যানজটে পড়তে হচ্ছে না চালক ও যাত্রীদের। কখনও কখনও ওই যানজট
মহাসড়কের উভয় পাশে ২-৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়।
ব্যস্ততম মহাসড়ক নিরাপদে
পারাপারের জন্য প্রতিটি স্টেশন এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে ফুটওভার ব্রীজ।
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনে নির্মিত ওই ফুটওভার ব্রীজের মাত্র ১৫-২০ গজের
মধ্যে নিচু সড়ক বিভাজন থাকায় পথচারীরা ৩০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার ব্রীজ
ব্যবহারে অনিহা। সন্নিকটে থাকা ১ ফুট উচ্চতার নিচু বিভাজন অতিক্রম করে কম
সময়ে মহাসড়ক পারাপার সহজ হওয়ায় কেউ আর ব্যবহার করছে না ফুটওভার ব্রীজ।
অপরদিকে,
প্রশাসনের নজরদারীর অভাবে যাত্রী উঠানো-নামানোর জন্য নির্ধারিত স্থানে
থামছে না বাস। চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনটির পূর্বাংশে মহাসড়কের নিচু
বিভাজন এলাকায় অবাধে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী পরিবহন এবং ওই স্থানে অবৈধ
মাইক্রোবাস-মারুতি স্ট্যান্ড গড়ে উঠায় যাত্রীরা নিচু বিভাজন অতিক্রম করে
খুব সহজেই মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে।
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন হয়ে
যাতায়াত করছে চান্দিনা ও দেবীদ্বার উপজেলার মানুষ। এছাড়াও মুরাদনগর, বরুড়া ও
বুড়িচং উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের যাত্রীরাও ওই স্টেশন থেকে যাতায়াত করছে
বিভিন্ন স্থানে। যে কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারী
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন এলাকায় গাড়ি থামিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে।
মিনিটের
মধ্যে কয়েকবার গাড়ি থামিয়ে মহাসড়ক পারাপার হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এমন
কোন সময় নেই যে যানজটের কবলে না পড়ে মহাসড়কের চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন
এলাকা অতিক্রম করতে পেরেছে কোন যানবাহন।
চান্দিনা বাগুর বাস স্টেশনের
পাশে চা দোকানি আব্দুস ছামাদ জানান, ‘চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনের এক পাশে
চান্দিনা উপজেলা অপর পাশে দেবীদ্বার উপজেলা। ওই দুই উপজেলার মানুষের
প্রতিদিনের যাতায়াত এই মহাসড়কের উপর দিয়ে। এছাড়া দেবীদ্বার থেকে যাত্রীরা
এসে নিচু ডিভাইডারের কাছে এসে থামে। অপরদিকে, ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী যাত্রী
পরিবহনে সকল যানবাহন ওই নিচু ডিভাইডারের কাছে এসে থামে। যে কারণে প্রতি
মিনিটে মানুষ গাড়ি থামিয়েই নিচু ডিভাইডার অতিক্রম করে মহাসড়ক পারাপার
হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই যানজট লেগে আছে’।
বাস চালক মিজানুর রহমান জানান,
এক ফুট উচ্চতার নিচু ডিভাইডার পাইলে কেউ কি আর ৩০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার
ব্রীজ ব্যবহার করবো? পথচারীদের ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করাতে হলে নিচু
ডিভাইডারের উপর দিয়ে কাঁটা তারের বেড়া দিতে হবে। তাহলে মানুষ বাধ্য হয়েই
ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করবে। আর যখন মানুষ ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করবে এবং
বাস গুলো নির্দিষ্ট স্থানে থামবে তখন যানজটও কমে যাবে।
হাইওয়ে পুলিশ
ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ ( ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) সাইফুল ইসলাম জানান,
মানুষকে কিছুতেই ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করানো সম্ভব হচ্ছে না। সড়ক ও জনপথ
বিভাগ থেকে যতদিন নিচ বিভাজনটি বন্ধ করা না হবে ততদিন এই সমস্যা থাকবেই।
এ
ব্যাপারে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা
জানান, মানুষের মধ্যে সচেতনতার বড়ই অভাব। তারপরও যেহেতু স্টেশন এলাকায় নিচু
বিভাজনটি রয়েছে সেটি বন্ধ করতে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে
যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।