
রণবীর ঘোষ কিংকর।
দিগন্ত
 জুড়ে শরতের কাশফুলের সাদা শুভ্রতা মনে করিয়ে দেয় বিপদনাশিনী দেবী দুর্গার 
আগমনী বার্তা। করোনা ভাইরাসের কালো থাবা থেকে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় 
মর্ত্যলোকে দেবীর আরাধনায় সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লা জেলা জুড়ে চলছে ব্যাপক
 প্রস্তুতি। 
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা 
পূজাকে ঘিরে এখন প্রতিটি পূজা মন্ডপে দেবী দুর্গার মূর্ত প্রতীক প্রতিমা 
তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কি দিন, আর কি রাত। দিনে রাতে সমান 
তালে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ওই মৃৎ শিল্পীরা। 
খড়, বাঁশ ও মাটিতে মূর্তির 
কাঠামো তৈরি হয়ে গেছে আরও আগে। এখন চলছে ফিনিশিং, রং তুলির কাজ ও মূর্তির 
সাজসজ্জা। কেউবা মাটির মূর্তিতে রং দিচ্ছেন, কেউবা রং তুলির আঁচরে ফুটিয়ে 
তুলছেন দেবীর অবিকল চেহারা। 
স্বামী বিবেকানন্দ সাকার রূপের উপলব্ধি করে
 বলেছিলেন, “পুতুল পূজা করে না হিন্দু/ কাঠ-মাটি দিয়ে গড়া, মৃন্ময়ী মাঝে 
চিন্ময়ী হেরে, হয়ে যায় আত্মহারা।”
এ চিন্ময়ী রূপই মা দুর্গার চিরকল্যাণী রূপ। যা জগতের সকলের চিরকাঙ্খিত মাতৃরূপ। এখানেই শারদীয় দুর্গোৎসবের সর্বজনীনতা ও সাফল্য। 
আর
 সাফল্য অর্জনের চেষ্টায় কুমিল্লার প্রতিটি পূজা মন্ডপে প্রতীমাকে স্বরূপে 
ফিরিয়ে আনতে চলছে শেষ মুহুর্তের রং তুলির কাজ। মৃৎ শিল্পীরা তাদের নিপুন 
হাতে অপরূপ রূপে সাঁজিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গা, লক্ষী, সরস্বতি, 
কার্তিক-গণেশসহ আরও অনেক দেব-দেবীর মূর্তি।
কুমিল্লা মহানগরীর কাত্যায়নি
 কালি বাড়ি, কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বরকমতা ও চান্দিনা উপজেলা সদরের 
সাহাপাড়া এলাকায় রয়েছে মূর্তি তৈরির কারাখানা। দিনে দিনে মৎ শিল্পীর সংখ্যা
 কমে যাওয়ায় এখন প্রতিটি মন্ডপে গিয়ে মুর্তি তৈরির করতে পারছে না ওই  মৃৎ 
শিল্পরা।  যে কারণে তারা অর্ডার নিয়ে কারাখানায় মুর্তি তৈরি করে পৌঁছে 
দিচ্ছে পূজা মন্ডপগুলোতে। 
বরকামতা গ্রামের প্রতিমা তৈরির কারাখানা 
মালিক রবিন্দ্র চন্দ্র পাল জানান, এবছর আমি ৩৪টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরির
 কাজ হাতে নিয়েছি। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই 
প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে মন্ডপে মন্ডপে পৌঁছে দিতে পারবো। 
আগামী ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠি পূজার মধ্য দিয়ে কুমিল্লা মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলায় ৭৯৫টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।