মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় চেয়ারম্যানের দুই মেয়ে ও পুত্রবধুর নাম
Published : Sunday, 3 October, 2021 at 12:00 AM
দেবিদ্বার প্রতিনিধি।
সরকার দরিদ্র গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন হতদরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার সুবিধা চালু করেছেন। অথচ হতদরিদ্র মায়েদের ভাতার তালিকায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের দুই মেয়ে ও পুত্রবুধূর রয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে নামের মাতৃত্বকালীন ভাতার সুবিধার তালিকাতে তাদের নাম পাওয়া গেছে।
গত তিন বছর ধরে তারা সরকারি এ ভাতা তুলছেন বলে তালিকার সূত্রে জানা যায়। ওই চেয়ারম্যানের নাম মো. খোরশেদ আলম। তিনি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এছাড়াও অতিদরিদ্র গর্ভবতী নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নাম তালিকাভুক্ত করতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগী নারী।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয় থেকে পাওয়া তালিকা থেকে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের নামের তালিকায় গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলমের দুই মেয়ে জাকিয়া ও কানিজ জোহরার নাম এবং ২০-২১ অর্থ বছরের তালিকায় পুত্রবুধু হালিমা আক্তারের নাম রয়েছে।
ভাতা প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী, অসহায়, স্বামী অক্ষম, বয়স ২০-৩৫ বছরের নিচে, পাঁচ শতকের নিচে জমি থাকা ব্যক্তিরা সরকারি এ সুবিধা পাবেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের দুই মেয়ে ও পুত্রবুধু সচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও গত তিন বছর ধরে মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের হতদরিদ্র পরিবারের নারীদের সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করে থাকে। প্রতিজন নারীকে মাসে ৮০০ টাকা করে ৩৬ মাসে ২৮ হাজার ৮০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হয়। ২০১৯/২০ অর্থবছরে উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন এলাকায় ৭০জন হতদরিদ্র নারীকে মাতৃত্বকালীন ভাতার আওতায় আনা হয় এবং ২০/২১ অর্থ বছরের আরও ১৪ জন নাম তালিকায় অন্তভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে চেয়ারম্যানের নিকট আত্মীয়সহ তাঁর দুই মেয়ে ও পুত্রবুধূর নাম রয়েছে।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো.খোরশেদ আলম বলেন, আমার দুই মেয়ে ও পুত্রবুধু ভাতা পায়। মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রধানমন্ত্রীর মেয়েও পেতে পারে। এতে কোন সমস্যা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোসা. সালমা ইয়াসমিন বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের দুই মেয়ে ও এক পুত্রবুধুর নাম রয়েছে। এত বছর আমরা তা জানতাম না। পরে কয়েকদিন আগে এ বিষয়টি নজরে আসে। আমি এ বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব।