পর্যটন ও সংস্কৃতি শিল্পকে পুনরুদ্ধারে একাধিক উদ্যোগের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করছে মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব। মালয়েশিয়ার পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় (মোটাক) বলছে, উদ্যোগগুলোর মধ্যে নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনার তথ্য দুই দেশের মধ্যে শেয়ার করা হয়। বিশেষত কোভিড-১৯-এর প্রভাব থেকে পর্যটন শিল্পকে কীভাবে পুনরুদ্ধার করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করবে দুই দেশ।
পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ন্যান্সি শুকরি এবং সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিবের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই উদ্যোগগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় মোতাকের মহাসচিব ডা. নূর জারি হামাত উপস্থিত ছিলেন।
উভয় দেশের ভ্রমণ চাহিদা বৃদ্ধি এবং পর্যটনকেন্দ্রিক স্থান হিসেবে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর টেকসই ব্যবস্থাপনায় তথ্য শেয়ার করে তারা। এ ব্যাপারে সর্বোত্তম পদক্ষেপ বৃদ্ধির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পর্যটন কর্মসূচির যৌথ প্রমোশন চালানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়। শনিবার (১৯ জুন) মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সৌদি আরব তাদের গ্রামীণ পর্যটন কর্মসূচি পরিচালনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে এবং মালয়েশিয়া কয়েকটি নতুন পর্যটন পণ্যের ব্যাপারে সৌদিকে অবহিত করে।
দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ায় মোট ২৬.১ মিলিয়ন পর্যটক আগমনের মধ্যে সৌদি আরব থেকে আগতদের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২১ হাজার ৪৪৪ জন।
মালয়েশিয়া একটি মুসলিম মডারেট উন্নত আধুনিক দেশ। ৫৪ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ভূমিপুত্র হলো- ‘মালায়ু’ জাতি। দেশটির সংবিধান মতে মালায়ুরা দেশটির মালিক। এছাড়া চাইনিজ (মালয়েশিয়ান চাইনিজ), ইন্ডিয়ানসহ (মালয়েশিয়ান ইন্ডিয়ান) অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও তাদের নিজ নিজ ধর্ম, নিজস্ব সংস্কৃতি স্বাধীনভাবে পালন করার অধিকার রাখেন।
মালয়েশিয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভিড় করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গড়ে প্রতি বছর পঁচিশ মিলিয়নের বেশি পর্যটক আসেন দেশটিতে। মুসলিম বিশ্বের পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ মালয়েশিয়া। সারা বছর আরব পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে দেশটি।
চলমান মহামারি কারণে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় পর্যটকের সংখ্যা ৭৮ দশমিক ছয় শতাংশ কমে গেছে। এক বছর আগে যেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল দুই কোটির বেশি।
দেড় বছরে পর্যটন খাতে আয় কমেছে প্রায় ৮১ শতাংশ। ২০১৯ সালে পর্যটন খাতে আয় ছিল ৬৬ দশমিক এক বিলিয়ন রিঙ্গিত। অথচ চলমান মহামারিতে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ছয় বিলিয়ন রিঙ্গিতে।
পর্যটন খাতে নিম্নমুখী প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাথাপিছু পর্যটক ব্যয়ও কমেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই হার কমেছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। পর্যটক প্রতি মাথাপিছু ব্যয় ছিল দুই হাজার ৯৩৮ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, যা ২০১৯ সালে ছিল তিন হাজার ২৮৯ রিঙ্গিত।
২০২০ সালের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ থাকায় দেশটিতে পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে।