বর্তমান
সরকার যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়, তার শীর্ষে আছে তথ্য-প্রযুক্তি। এ খাতে
দেশ যথেষ্ট এগিয়েও গেছে। শহরের সীমা ছাড়িয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির মোবাইল,
ইন্টারনেট গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির নানা সুফল ক্রমেই
মানুষের সহজলভ্য হচ্ছে। এখন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ করা সহজ হয়ে
গেছে। তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার ক্রাইম বা
তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধও দ্রুত বেড়ে চলেছে। নিরীহ মানুষ এ ধরনের
অপরাধের শিকার হচ্ছে। আবার সরকারের বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্র চলছে
তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে। রটানো হচ্ছে নানা ধরনের গুজব। বিভিন্ন
গোষ্ঠীকে সরকারবিরোধী কর্মকা-ে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক অপরাধ যেমন
ঘটছে, তেমনি ছড়ানো হচ্ছে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা। জঙ্গি কর্মকা- সংগঠিত ও
সংঘটিত করা পর্যন্ত বহু রকম অপরাধই রয়েছে।
কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত
এক খবরে বলা হয়েছে, দেশের বাইরে অবস্থান করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও
গুজব রটানোর প্রবণতা বেড়েই চলেছে। তথ্য-প্রযুক্তির ফায়দা নিয়ে আবেগপ্রবণ
তরুণসমাজকে বিপথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টায় তৎপর একটি সংঘবদ্ধ চক্র। বঙ্গবন্ধু
ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতেও দ্বিধা করছে না এই রাষ্ট্রবিরোধী
চক্র। ফেসবুকে পেজ, গ্রুপ ও ইউটিউবে চ্যানেল খুলে নানা রকম ধর্মীয় উগ্র
মতবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন ইস্যুতে সরলমনা তরুণসমাজের আবেগকে
পুঁজি করে জিহাদের ডাক পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের সময়ও সাইবারজগতে অপপ্রচার চালিয়েছে এই চক্রটি। ব্যবহার করেছে
ফেসবুক, টুইটার, জি-প্লাস, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
সরকারবিরোধী প্রচার চালাতে গিয়ে দেশকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে চক্রটি।
অনলাইন বা ইন্টারনেটকে যোগাযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তারের হাতিয়ার
হিসেবে ব্যবহার করলেও ব্যবহারকারীরা বেশির ভাগই বিদেশে অবস্থান করে। ফলে
তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় না।
গুজব ছড়ানোর অভিযোগে
প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে
অপরাধ তদন্ত বিভাগ। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে
দেশের বাইরে থেকে কেউ যেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর মতো কাজে
জড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে বিশেষ নজরদারি রয়েছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো
বা মিথ্যাচার নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। তাই সাইবার
নজরদারি বাড়াতে হবে।