ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কিশোর গ্যাং নির্মূলে ব্যবস্থা নিতে হবে
Published : Monday, 17 May, 2021 at 12:00 AM
কিশোর গ্যাং নির্মূলে ব্যবস্থা নিতে হবেআবার আলোচনার বিষয় ‘কিশোর গ্যাং’ কালচার। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে উঠতি বয়সী কিছু কিশোর। স্কুল-কলেজের গ-ি পার হওয়ার আগেই কিশোরদের একটা অংশের বেপরোয়া আচরণ এখন পাড়া-মহল্লায় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয় তারা। উদ্ভট নাম দিয়ে খোলা হয়েছে নানা গ্রুপ।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে তাদের পাড়া-মহল্লাকেন্দ্রিক উৎপাত আরো বেড়েছে। প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়েছে, এই কিশোর গ্যাং গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ মতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীদের হাতে। ছিনতাই, মাদক কারবার ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার পাশাপাশি এলাকায় রাজনৈতিক দলের আধিপত্য বিস্তার করতেও কাজ করে এই দুই গ্রুপের অনুসারীরা। দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে এই আশায় স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের মাঝেমধ্যেই কাছে টানেন। মিছিল-সমাবেশকেন্দ্রিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে দাপট দেখানো, নীরব চাঁদাবাজির বড় হাতিয়ার এরাই। তারা ঈদ উৎসবে ‘বড় ভাইদের’ কাছে যায় সালামির আশায়। ‘বড় ভাইয়েরা’ ত্রাণ বা সহায়তা হিসেবে যেখানে যা পান তার বেশির ভাগই ‘ছোট ভাইদের’ তুষ্ট করার জন্য বিলিয়ে দেন।
কিশোর গ্যাং গোষ্ঠীগুলো তৈরি হলো কেন? কেনই বা তারা এত ভয়ংকর হয়ে উঠেছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে নানা অসংগতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। কিশোর বয়সে হিরোইজমের প্রবণতা থাকে। আবার কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে উঠছে। অনেক েেত্র ভিনদেশি সংস্কৃতি ইচ্ছামতো তাদের আয়ত্তে চলে যাওয়ায় কিশোরদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে অনেক আগে থেকেই অপরাধী তালিকায় নাম এসেছে অল্পবয়সীদের। তাঁরা মনে করেন, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি পারিবারিক শিার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। সন্তানের শিা ও চরিত্র গঠনের প্রতি অভিভাবকদের যতটা মনোযোগ দেওয়া দরকার, তা প্রায়ই দেওয়া হয় না। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধজগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক কর্মকা-ে তাদের ব্যবহার করেন।
এ অবস্থায় পারিবারিক অনুশাসন, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এখনই এ ব্যাপারে গুরুত্ব না দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। শুধু আইন-শৃঙ্খলা রা বাহিনী দিয়ে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গ্যাংগুলোকে যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাঁদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি ওই কিশোরদের সংশোধনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।