কোভিড প্রণোদনা: ৩ মাসের বেতন-ভাতা চান পোশাক ও বস্ত্র মালিকরা
Published : Monday, 26 April, 2021 at 12:00 AM
মহামারীকালে ব্যবসার মন্দা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শ্রমিক-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন ও বোনাস দিতে সরকারের কাছে আবারও প্রণোদনা চেয়েছেন পোশাক ও বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা।
রোজার ঈদের আগে বেতন-ভাতা ও বোনাস দিতে গত বছর মহামারীকালে দেওয়া প্রণোদনার মতই ঋণ চান তারা।
তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের প্রধান তিনটি মালিক সমিতি বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ শনিবার এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপ আবার বাড়তে থাকায় পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে নতুন করে প্রণোদনা ঋণের বিষয়টি কয়েক মাস ধরে আলোচনায় ছিল। এরই মধ্যে সংগঠন তিনটি এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিল।
দেশে ২০২০ সালের শুরুতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে রপ্তানিমুখী কারখানার এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই মাসের বেতন-ভাতা দিতে কয়েক ধাপে বাড়িয়ে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রণোদনা ঋণ হিসেবে দেয় সরকার।
মাত্র ৪ শতাংশ সুদের ওই ঋণ পরিশোধের আগে থাকছে ১২ মাসের গ্রেস পিরিয়ড। ফলে আগামী আগস্টের আগে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে না।
শনিবার বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান ও বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন অর্থ মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে গত বছরের মত একই ধরনের সুযোগ সুবিধা চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, “২০২০ সালে শ্রমিক কর্মচারীদের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার ফলে এই শিল্পের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে এবং সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছে।“
পোশাক খাতে বেতন-ভাতা ও কারখানা পরিচালনার ব্যয় পণ্য রপ্তানির মূল্য এবং এর বিপরীতে পাওয়া নগদ সহায়তার অর্থ থেকে পরিশোধ করা হয় জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, “রপ্তানিমূল্য ফেরত না আসায় নগদ সহায়তার আবেদনও করা যাচ্ছে না। আবার অনেক ক্রেতা হ্রাসকৃত হারে মূল্য পরিশোধ করছেন। এসব কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট নিরসন করতে পারছে না।“
এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদের আগে সচল কারখানাগুলোর বেতন-ভাতা ও বোনাস দিতে চাপ থাকলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা পরিশোধ করা জটিল হয়ে পড়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, “বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পকে সহায়তা করতে শ্রমিক-কর্মচারীদের চলতি এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন-ভাতা ও বোনাস বাবদ গত বছরের মত সহজ শর্তে ঋণ একান্ত আবশ্যক।”
যোগাযোগ করা হলে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেক্টরের জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গেলাম। এখন যেসব কারখানা ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন ঠিক রেখেছে, তারা বেতন-ভাতা বাবদ ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবে। কতটি কারখানা এই ঋণ পেতে পারে তা জানা যাবে আরও পরে।“
গত বছর রপ্তানিমুখী কারখানাগুলো বেতন-ভাতা দিতে ঋণ পেলেও বস্ত্রকলগুলো প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে চলতি মূলধনের ৩০ শতাংশ ঋণ পেয়েছে। এবারও সেভাবে ঋণ আশা করছেন বলে জানান খোকন।