ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বাঁশখালীর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ-তদন্তের রিট শুনবেন হাইকোর্ট
Published : Monday, 26 April, 2021 at 12:00 AM
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৫ এপ্রিল) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আদালতে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। রিটের বিষয়টি জাগো নিউজকে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল (২৬ এপ্রিল) রিট আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় থাকবে। এর আগে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষ থেকে গত ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন দাখিল করা হয়। আসকের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, সৈয়দা নাসরিন, শাহীনুজ্জামান ও নীনা গোস্বামী রিট আবেদনটি দাখিল করেন।
পরে রিটের বিষয়ে শুনানির জন্য আবেদনটি রোববার (২৫ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। এরপর আদালত রিট আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্তির আদেশ দেন।
রিট আবেদনে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে তিন কোটি টাকা এবং আহতদের পরিবারকে দুই কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ওই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলা প্রত্যাহার, প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা, নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সাত সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
ওই হতাহতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে এবং নিহত-আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে রিটে।
গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত বেশ কয়েকজনকে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)। সংঘর্ষে আবদুল কাদের, ইয়াসির আহমেদ, আসাদুজ্জামান নামে তিন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের পর কনস্টেবল আবদুল কাদের বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী ও শ্রমিকসহ ১০ হাজারের মতো মানুষ আমাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।’
ঘটনার পর চমেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, চমেক হাসপাতালে এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- শাকিল (১৯), আমিনুল ইসলাম (২৫), দিদার (২১), বিল্লাল (২৬), আযাদ (১৮), মিজান (১৮), কামরুল ইসলাম (২৬), শিমুল (২৮), শহিদুল ইসলাম (২৩) ও হাবিবুল্লাহ (২০)।
ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সংঘর্ষের ওই ঘটনায় ওই দিন রাতে বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয়ে সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল আসকের পক্ষ থেকে সরকারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। ওই নোটিশে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। ওই নোটিশের পর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩ কোটি এবং আহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ৩ কোটি টাকা দিতে এবং ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়। ওই রিট আবেদনটি শুনবেন হাইকোর্ট।