জহির শান্ত ।।
হেফাজত ইসলামের ডাকা হরতালের প্রভাব পড়েনি কুমিল্লায়। রবিবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকেই স্বাভাবিক ছিলো জনজীবন। রাস্তাঘাটেও যান চলাচলেও ছিলো স্বাভাবিক চিত্র। মানুষজনের চলাচল ছিলো আগের মতোই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন সতর্ক অবস্থানে। তবে হরতাল সমর্থনে মিছিল হয়নি কোথাও, দেখা যায়নি হেফাজতের কর্মী সমর্থকদেরও। অপরদিকে হেফাজতের ডাকা হরতাল ও তা-বের প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংঠনের নেতৃবৃন্দ
গতকাল রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গাতেই স্বাভাবিক চিত্র। নগরীতে যানবাহন চলাচলের নিত্যদিনের মতোই স্বাভাবিক চিত্র ছিলো গতকালও। কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, টমসনব্রিজ, শাসানগাছায় আগের মতোই ছিলো গাড়ির চাপ- যানজট।
একই চিত্র দেখা গেছে মহাসড়কেও। দূরপাল্লার ভারী যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা সীমিত থাকলেও ছোট ছোট গাড়ি চলাচল ছিলো আগের মতো। ভিড় ছিলো পথচারীদের। মহাসড়কের ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কথা হয় পথচারী ফাহিমা এনির সাথে। স্বামীর সঙ্গে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। এ প্রতিবেদককে এনি বলেন, কোথাও তো হরতালের কোনো প্রভাব দেখছি না। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় কিছুটা ভয় ভয় লাগলেও রাস্তায় এসে দেখি সব স্বাভাবিক।’
এদিকে হেফাজতের ডাকা হরতাল ও তা-বের প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংঠনের নেতৃবৃন্দ।
রবিবার বেলা ১১টায় হরতালের প্রতিবাদে কুমিল্লায় মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন।
মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারাণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্যাহ খোকন, আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর, সাংগঠনিক সম্পাদক চিত্তরঞ্জন ভৌমিক, যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুলসহ অন্যান্যরা।
এর আগে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ এই শ্লোগানের ব্যানার নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিলে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
অপরদিকে রবিবার সকালে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল প্রতিহত করতে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা নেতৃত্বে কুমিল্লা নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান কর্মসূচী ও প্রতিবাদ মিছিল করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মিছিলটি কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, রানীবাজার হয়ে মডার্ন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম সিকদার, কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মানিক খন্দকার, মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা হাজী মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী তথ্য প্রযুক্তি লীগ ফোরাম সভাপতি কুমিল্লা মহানগর সারিয়া মাহমুদ শাকি, কুমিল্লা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুন্নাহার মিতা শিকদারকে, সাধারণ সম্পাদক আইরিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী তথ্য প্রযুক্তি লীগ ফোরাম সাধারণ সম্পাদক কুমিল্লা মহানগর মাসুদুল ইসলাম বাবুসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মিছিলটি কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, রানীবাজার হয়ে মডার্ন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান বলেন, হরতালের কারণে কুমিল্লায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কুমিল্লাবাসী সহনশীলতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।