
গত
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ একনেকের সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকা-ের পাশাপাশি সরকার
মানুষের জীবিকা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, গৃহায়ণ এবং কভিড-১৯ টিকার বিষয়টিকে
প্রাধান্য দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ যেন খাদ্য, বাসস্থান ও
চিকিৎসায় কোনো কষ্ট না পায়, কৃষি উৎপাদন যেন বিঘিœত না হয়, জনগণ যাতে
সহজভাবে জীবন-জীবিকা চালিয়ে যেতে পারে—সেদিকে ল রাখাও সরকারের মূল ল্য বলে
জানিয়েছেন তিনি।
মুজিববর্ষে দেশের সব মানুষকে ঘরের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার
আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, বাংলাদেশের একজন
মানুষও গৃহহীন থাকবে না। তাঁর এই কল্যাণমুখী ঘোষণা সফল করতে সর্বাত্মক কাজ
চলছে। এরই মধ্যে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। একনেকের
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে,
সেখানে বাংলাদেশে যেভাবে অর্থনীতিকে চালু রাখা হয়েছে, সেটা বজায় রাখতে হবে।
অন্যদিকে মানুষের খাদ্য সমস্যা না হয়, কৃষি উৎপাদন বিঘিœত না হয় সেদিকে
দৃষ্টি দিতেও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, এখন গুরুত্ব দিতে হবে
খাদ্য উৎপাদন, মানুষকে খাদ্য সরবরাহ এবং সময়মতো ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টিতে।
প্রয়োজনে আরো ভ্যাকসিন কিনতে অর্থ সংস্থান রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন
তিনি। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন
কোটি ডোজ টিকা কিনেছে সরকার, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত হাতে পাওয়া গেছে ৭০ লাখ
ডোজ। চুক্তি অনুসারে বেক্সিমকো সেরাম থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা
এনে সরকারকে দেওয়ার কথা রয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ৪০ লাখ ডোজ টিকা দেশে
আসবে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওদিকে কোভ্যাক্সের আওতায় প্রথম ধাপে কোন দেশ
কত টিকা পাবে, তার তালিকা গত মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা। তালিকা অনুযায়ী আগামী মে মাসের মধ্যে বাংলাদেশ
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি ৯ লাখ আট হাজার ডোজ টিকা পাবে।
একটু
পেছনে ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই, সরকার করোনা মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব
ব্যবস্থা নিয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র
মানুষের আয় বেড়েছে। অনেক হতাশার মধ্যেও আশা জাগিয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো
রেমিট্যান্স। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকাশিত মানব উন্নয়ন সূচক
প্রতিবেদন-২০২০-এ বলা হয়েছে, করোনার সময়েও বিশ্বের মানব উন্নয়ন সূচকে এগিয়ে
যাওয়ার ধারাবাহিকতায় গত ৩০ বছরে বাংলাদেশ এগিয়েছে ৬০ শতাংশ। সর্বশেষ মানব
উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ আরো দুই ধাপ এগিয়েছে। মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু
বেড়েছে।
একনেকের বৈঠকে এক লাখ সাড়ে ৯৭ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত উন্নয়ন
বাজেট অনুমোদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন, দেশের অর্থনৈতিক
কর্মকা-ের প্রসার, বেশি কর্মসংস্থান, শিা-স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন,
মহামারি কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন,
খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের কল্যাণমুখী কর্মসূচি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।