ধর্মকে ব্যবহার করেও বাংলা ভাষার গতিরুদ্ধ করা যায়নি
এহ্তেশাম হায়দার চৌধুরী ||
অভিজাত
মুসলমানরা কখনোই বাংলা ভাষাকে নিজের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেননি। তারা আরবি,
উর্দু এবং ফার্সিকে যতোটা মূল্যায়ন করে কাছে টেনে নিয়েছেন, বাংলা ভাষাকে
ততটাই অবহেলা এবং অবজ্ঞা করেছেন। তাই এ অভিজাত শ্রেণির সদরে অন্দরে স্থান
না পাওয়া বাংলা ভাষা তাঁদের দুয়ারে গুটে কুড়ানো দাসী হয়ে যুগ যুগ ধরে
অবহেলা পেয়েছে।
মুসলমানরা কখনো ধর্মের দোহাই দিয়ে কখনো বা জাতীয় ঐক্যের
ধূঁয়া তুলে মাতৃভাষা বাংলাকে বর্জন করেছে। আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল হয়েছে।
সারা বিশ্বের মুসলিম সমাজের কাছে আরবি ভাষা একটি বিশেষ মর্যাদায় সমাসীন।
কিন্তু শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার কারণে নিজের মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে
আরবি-ফার্সি ভাষা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ রাসুল কোরআন হাদিসে কোথাও এমন কথা
বলেননি। মুসলমান রাজ শক্তি এবং অভিজাত শ্রেণির বিরুদ্ধে সেদিন কলম
ধরেছিলেন ষোড়ক শতকের কবি সৈয়দ সুলতান। তিনি তার “শবে মেরাজ” কবিতায়
বলেছিলেন- যারে যে ভাষে প্রভূ করিল সৃজন
সে ভাষ তার অমূল্য যত ধন।
ধর্মের
দোহাই দিয়ে বাঙালিকে বাংলা ভাষা থেকে দূরে রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে
সপ্তদশ শতাব্দীর কবি আবদুল হাকিমকে দ্রোহী করে তোলে। তিনি তাঁর ‘নুরনামা’
কাব্যের ‘বঙ্গবানী’ কবিতায় তার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনঃ
জে সবে বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয়-ন জানি
দেশি ভাষা বিদ্যা যার মনে না জুয়ায়
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশে ন যায়।
সপ্তম
শতাব্দীতে খোলাফায়ে রাশেদীনের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রাঃ) এর
খেলাফতকালে মুসলমানরা ইরান জয় করে সেখানে ইসলাম ধর্ম প্রবর্তন করেন। তখন
শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো মদীনায়। মদীনার ভাষা আরবি, কোরআন হাদিস আরবি
ভাষায়। ইরানের গভর্নর আরবি, আমীর ওমরাহ রাজ কর্মচারী, সৈন্য সামন্তও আরব
অঞ্চলের। বহু আরবি শিক্ষিত আলেম ওলামাও সেখানে ছিলেন। রাজশক্তির ইচ্ছা থাকা
সত্ত্বেও সেখানে ফার্সির পরিবর্তে আরবি ভাষাকে সাধারণের মধ্যে মাতৃভাষা
হিসেবে চালু করা সম্ভব হয়নি। তুরস্ক ইসলামী পতাকা উড়লে সেখানেও আরবি ভাষা
প্রবর্তনের চেষ্টা করা হয়েছিলো। তুর্কি বীর কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে
জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটলে আরবি ও ফার্সি ভাষাকে বাদ দিয়ে তুর্কিরা তাদের
তুর্কি ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দান করেন। ধর্মের দোহাই সেখানেও
টিকেনি। ধর্ম, আবেগ ও মুসলমান জাতির ঐক্য সংহতির কথা চিন্তা করেও কোন দেশের
সাধারণ মানুষ তাদের মাতৃভাষাকে বর্জন করে আরবি-ফার্সি গ্রহণ করতে রাজি
হয়নি।
ভারত বিভাগের অনেক আগ থেকেই এ অঞ্চলের রাষ্ট্রভাষা কী হবে তা
নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। বাংলার পরিবর্তে আরবিকে রাষ্ট্রভাষা করার
পক্ষে বিপক্ষে বাক বিত-া শুরু হয়। আরবি হরফে বাংলা লেখার পক্ষে যুক্তি
দেখিয়ে তখনকার মুসলিম সমাজের মুখপত্র ‘আল-এসলাম’ পত্রিকায় বলা হয়েছিল-
“আমাদের মাতৃভাষা আরবি অক্ষরে লিখিত হইলে নিশ্চয়ই তাহার প্রতি সাধারণের
ভক্তি বেশি হইবে... মুসলমানদের উচিত এ বিষয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করা।”
এভাবেই
এদেশের সাধারণ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে আরবি-ফার্সিকে
চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৩৫ সালে চট্টগ্রামের জে এস সেন স্কুলের
আরবি-ফার্সির শিক্ষক মাওলানা জুলফিকার আলী আরবি হরফে বাংলা লেখার উদ্যোগ
নেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এ মাওলানা সাহেব সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন।
তিনি তাঁর প্রয়াশকে ধর্মীয় পবিত্র পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে সবার কাছে
প্রচার করে বেড়ান যে, সয়ং হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তাকে এ কাজে অগ্রসর হওয়ার
আদেশ দেন। মাওলানা জুলফিকার আলী এক পর্যায়ে বলেন- “এই পথ ধরেই অর্থাৎ আরবি
হরফ গ্রহণের মাধ্যমেই বাঙালি মুসলমানের ইহকাল এবং পরকালের মুক্তি মিলবে এবং
আরবি হরফ প্রবর্তিত হলে মনে করা হবে “রসুলে করীমের ইচ্ছা পূর্ণ হইল।”
পাকিস্তানিরা
ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এদেশের বাঙালি মুসলমানকে বিভিন্নভাবে
প্রতারণা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাঙালি এক লড়াকু জাতি। কোন অনিয়ম
অত্যাচারের কাছে এরা কখনোই মাথা নোয়ায়নি। বাংলা ভাষার স্থলে উর্দুকে সেদিন এ
জাতি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করেছে। ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের তাজা রক্ত
ঢেলে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এ জাতি
কুন্ঠিত হয়নি। এ আত্মাহুতির পথ ধরেই এরা একাত্তুরে বাংলাদেশের আকাশে
স্বাধীন পতাকা ওড়ায়।
ভরকেন্দ্রে বস্তু 
শাখাওয়াত সুমন ||
হাবলু
অনেক বছর পর দেশে ফিরলেন। অনেকটা ফিটফাট থাকতে পছন্দ করেন তিনি। গায়ে বালি
পড়লে আঙ্গুলের টোকা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আধুনিকতার ছোঁয়ার
বাইরে থাকতে নারাজ তিনি। বাড়ি ফিরার সময় আধুনিক একটি মেশিন সঙ্গে নিয়ে
আসেন। মেশিনটি এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য বহন করে। মেশিনটির পাশেই সব সময়ের জন্য
তাকে অবস্থান করতে হয়। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত থেকে ধীরে ধীরে হার্টের
ক্রিয়া বন্ধ হতে শুরু করলে হাবলুর এই মেশিন পূর্ব সংকেত জানিয়ে দেয়।
এলাকায় কারো অসুস্থ বোধ হলে মেশিনটির কাছে শুয়ে থাকে। হাবলুকে তাদের নাম,
বয়স এবং ফিঙ্গারিং এসব বিষয় মেশিনে সেটিং করে দেয়। তখন উপস্থিত সবাই টেনশন
মুক্ত হয়ে বসে থাকে। কেউবা শত পারসেন্ট টেনশন মুক্ত হয়ে শুয়ে থাকে। বসার
জায়গা না পাওয়া গেলে একে অন্যের হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। দূর থেকে এই
উপস্থিতিকে একটা বিচার কার্য বলে অনেকে ধারণা করে।
অনেক লোক হাবলুর
কাছে মেশিন ভাড়া নিতে আসে। বেচারা দিল-দরদী মানুষ সবার বিপদে দৌড়ে যায়।
মেশিন নিয়ে যাওয়ার পথে, এলাকার লোকজন জানতে পেরে সম্মানের সহিত দাঁড়িয়ে
যায়। দু’এক মিনিটের জন্য হলেও মৃত্যুর কোন সংকেত ছিল কিনা তা জানতে পারে
তারা। বাহ ! আমরা তো এখন পর্যন্ত সুস্থ আছি। মেশিনটি একসঙ্গে বেশ কয়েকজনের
হার্টের বিপদ সংকেত জানিয়ে দিতে পারে।
হাবলুকে নিরাপত্তা দিয়ে এক
অসুস্থ রোগীর বাড়িতে নেওয়া হলো। তখন তার জন্য আলাদা একটি রুমের ব্যবস্থা
করতে হয়। মেশিনটি তিনি তার রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন। হঠাৎ পাঁচজন লোকের
আগমন। তারা হাবলু ভাইকে স্বাগত জানালেন। হাবলু ভাইও কুশল বিনিময় করলেন।
‘কেমন আছেন আমাদের অতিথি হাবলু ভাই?’ ‘ভালো আছি।’ হাবলু ভাই তাদের পরিচয়
জানতে চাইলেন। ‘আমাদের এই কয়েকজন বিয়ে বাড়ি থেকে আসা।’ ‘নাম দিয়ে পরিচয়
বলুন।’ ‘দুঃখিত হাবলু ভাই। তেমনটা ভেবে উঠতে পারিনি।’ ‘কোন সমস্যা ?’
‘সমস্যা না, সাহায্য করলে উপকৃত হবো।’ হাফিজ বলে উঠলেন, ‘আমাদের জন্য
সমস্যাই বটে! ভাই। অনুরোধ, একদিন সময় দিন’। ‘সমস্যাটা বলবেন তো।’ ‘রফিক
তুমি বলো।’ ‘না, হাফিজ তুমি তো সুন্দর করে গুছিয়ে বলতে পারো।’ ‘আচ্ছা,
তোরা চুপ কর। আমিই বলছি। ভাই, বিষয়টা হলো বিয়েতে আমাদেরকে কোন আনন্দ করতে
দিচ্ছে না। বাচ্ছারা নাকি নাচানাচি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়বে। মাইকেল
জেকসান এর গানের সাথে পারপরমেন্স থাকবে। এরাতো পেশাদার ডেন্সার না। সমস্যা
দেখলেই হাসপাতালে শিপ্টিং করা যাবে।’ ‘ও সেটা বুঝিয়ে বলবে তো। তাহলে আমিও
তোমাদের সাথে হৈ-হুল্লা করে আনন্দ করার সুযোগ পেতে পারি।’ ‘কেন নয়।
নিশ্চয়ই ।’
হাবলু ভাইকে টেনশন ফ্রি করতে চাচ্ছেন মণি। ‘হাবলু ভাই টেনশন করবেন না। মেশিনটির নিরাপত্তা কর্মী রাখবো চার-পাঁচজন।’
‘আপনারা
কি নিরাপত্তা দিবেন। মেশিনটি ওপেনই করতে পারবে না কেহ। পাস ওয়ার্ড ,
রক্তের গ্রুপ, আর আমার কন্ঠস্বর ব্যবহার ছাড়া ওপেন হবে না। উচ্চ রক্তচাপের
লোক তা ওপেন করতেই পারবে না। পাস ওয়ার্ড ভুল টাইপ করলে মেশিনটি তাকে ধাক্কা
মেরে কয়েক হাত দূরে ফেলে দিবে। এটা রানিং করতে এক বছরের একটা কোর্স
করেছি।’
হাফিজ মাথা নাড়িয়ে জানালেন, ‘বুঝতে পেরেছি ভাই।’ হাসেম কোন
কথাই বলেননি। হঠাৎ বলে উঠলেন, ‘হাবলু ভাই, তাহলে আমরা নিরাপত্তাও পাবো আর
আপনার সাথে আনন্দও করতে পারবো।’
হাবলু ভাই মুচকি হাঁসি দিলেন। ‘আচ্ছা,
অনুষ্ঠান শুরু হবে কবে?’ হাফিজ জানালেন, ‘এইতো আজ সন্ধ্যায়’’। অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণ করবে কয়জন?’ ‘দশ-বারোজন হবে। সিরিয়াল অনুসারে তাদের নাম, বয়স ,
রক্তের গ্রুপ লিখে দিন।’
‘কেন হাবলু ভাই ?’
‘আপনারা বুঝবেন না। এগুলো সেটিং দিতে হবে। তালিকার বাইরে কেহ এটেন্ড করলে কোন সংকেত পাঠানো আমার সম্ভব হবে না।’
নিদু,
অনিকতো বলছে এটেন্ড করবে। হাফিজ বললেন, ‘ ফোন দিয়ে দেখ?’ নিদু, সংযোগ
দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাফিজ, এটা করলে কেমন হয়? নিদু জিজ্ঞেস করলেন, ‘সেটা
আবার কী’? ওর নামটা তালিকায় এ্যাড করে দেই!
‘হাবলু ভাই এটা কি সম্ভব?’
‘জি, করা যাবে। এটেন্ড না করলে শূন্য আসবে। ঠিক আছে। নাম দিয়ে দিচ্ছি।’
অনুষ্ঠান
শেষে হাবলু ভাইকে সরাসরি খেলার মাঠে নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের
প্যান্টে ওয়াই-ফাই লাইন সংযোগ পেতে একটি সিম কার্ড যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে।
যা মেশিনটির সাথে তথ্য সংগ্রহের জন্য নেট-ওয়ার্ককিং এর যোগাযোগ আছে।
খেলোয়াড়ের হার্টের রক্তনালিগুলো মেশিনের স্কেনে ভেসে ওঠে। হঠাৎ কোন ব্লকের
সৃষ্টি হলে খেলোয়াড়দের নামের তালিকাতে যোগ হয়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষ
দৌড়ালে তার ব্লাড প্রেসার কত ওঠতে পারে; তার তালিকা নাম অনুসারে চলে আসে।
হাবলু
দেখাল, নয় নম্বর খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিতে হবে। তার নামের পাশে হার্টের
স্পন্দনের হার বেশি দেখাচ্ছে। তাকে অবজার্ভেশনে রাখতে হবে। তৎক্ষণাৎ নয়
নম্বর খেলোয়াড়ের পরিবর্তে নিরানব্বই নাম্বার খেলোয়াড় মাঠে দৌড়ে চলে গেল।
ধারাভাষ্যকারের ভাষ্য সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। ১৩ নাম্বার খেলোয়াড় তার
ব্লাড প্রেসার অনেকটা ভালো , এমহূর্তে ব্লাড ছন্দের তালে তালে পাম্পিং
হচ্ছে। কোন সমস্যা দেখতে পারছি না আমরা। তিনি কেন বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন
না। তাকে আরো এ্যাকটিভ হতে হবে।
এ মুহূর্তে এক দর্শক এসে বলছেন, ‘আমার হার্টের অবস্থাটা একটু পরিক্ষা করুন, ভাই।’
‘না, আপনাকে কোন সংযোগ দেওয়া হয়নি।
‘ও, আচ্ছা। পরে দেওয়া যাবে?’
‘না ভাই। খেলোয়াড়দের কাজ করছি। পরে দেখা করবেন।’
‘ ঠিক আছে ভাই।’
ছড়া পালা -দুইসংগ্রহ : আনোয়ারুল হকজহিরুল হক দুলাল ||
আদর আলী
পান থেকে খসলে চুন
রক্ষা নাই
আদর আলীর বুকে ব্যামো
যক্ষা নাই
নিদান দিলো কবিরাজ
শংকা নাই
আদা হলুদ সবই আছে
লংকা নাই
পকেটে তার কয়েন আছে
তন্কা নাই
আদর আলীর বুকে ব্যামো
যক্ষা নাই।
ফরিদ মুজহার
কদর আলী আদর আলী
বাস করে সদরে
আদর আলী রাগ করে
চলে গেলো বন্দরে
কদর আলী কি করে?
আনোয়ারুল হক ||
যক্ষা নাই
তো খায় কেন চা দুধ ছাড়াই!
ব্যাখ্যা চাই
ইকবালকে ডেকে আনো
দিক দাওয়াই।
বলুক সে
ব্যামো নাই
তাহলে তো স্বস্তি পাই
দুলাল ভাই।
পরিমল বিকাশ সূত্রধর ||
আকাশে আজ মেঘ করেছে
বৃষ্টি নাই
কদর আলীর ঘুম ভেংগেছে
উঠে নাই।
সদর আলীর পাওনা অনেক
ভুলে নাই
শোয়া দেখে ফিরে গেল
ডাকে নাই।