
পরীক্ষিৎ চৌধূরী ।।
অবশেষে অতীতের মতো এবারও হালে পানি পেলো না গুজব। কোনও গুজবেই কাজ হলো না। অপপ্রচারকারীদের মুখে ছাই দিয়ে দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে করোনা টিকা গ্রহণকারী ৫৭৭ জনের সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ ও ভালো আছেন। নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা পর্যবেণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। টিকা নেওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেও তাদের মধ্যে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনার টিকা নিয়েছেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেলো, টিকা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন তিনি। বাসায় কোনও কাজের লোক নেই। বাসার সব কাজ তাকেই করতে হয়। টিকা নেওয়ার পরও তিনি সামলাচ্ছেন অফিস ও ঘর দুটোই। ওইদিনই পুলিশ সদস্যদের মধ্যে প্রথম টিকা নিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। আগের মতোই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন বলে জানান তিনি। টিকা নিয়ে রাতে জার্নি করে চট্টগ্রাম গিয়েছেন ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের মধ্যে তিনি প্রথম টিকা নিয়েছেন। পরদিন সকালে চট্টগ্রামের চেম্বারে রোগী দেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক দম্পতি ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল-অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী টিকা নিয়েছেন। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ এবং চিকিৎসক দম্পতি সকলেই একমত প্রকাশ করেছেন যে তাদের অন্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি।
সব শঙ্কা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বাংলার মানুষ এখন অধীর আগ্রহে অপো করছেন কত দ্রুত ভ্যাকসিন নিয়ে তারা করোনা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন সেই সময়ের জন্য। বৈজ্ঞানিকভাবে এটা প্রমাণিত যে টিকা ছাড়া কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি নেই। অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষকে টিকা নিতে হবে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্ত রোগীর দিক থেকে ৩১তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। আর মৃত্যুর সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টিকাদানের শুভসূচনা করেছেন বাংলাদেশে, সেই টিকার ফর্মুলা তৈরি করেছেন ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। দেশে যে ভ্যাকসিন এসেছে সেটা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট প্রস্তুতকারক মাত্র। সেরাম ইনস্টিটিউট পৃথিবীর বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক; যারা প্রতিমাসে প্রায় ১০ কোটি টিকা তৈরি করে। শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, মরিশাস ও ব্রাজিলেও বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় এ টিকা পাঠানো হবে। কোভিশিল্ড দেওয়া হলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শুরু করে এবং যেকোনও করোনাভাইরাস দেহে ঢুকে পড়লে তাকে আক্রমণ করতে শিখে যায়।
সত্যি বলতে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের এত বিশাল প্রডাকশন এই মুহূর্তে সেরাম ছাড়া অন্য কেউ স্বল্প মূল্যে দিতে পারবে না। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় ধরে ভ্যাকসিন উৎপাদন করে আসছে। তারা দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সেরাম প্রতিদিন ২৩ লাখ করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনে সম। মাসে পঞ্চাশ মিলিয়ন। তাদের টার্গেট এক বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন, যা আনুমানিক ৪০টি দেশে রফতানি করবে। এ মুহূর্তে একমাত্র তারাই এত বৃহৎ স্কেলে অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় ভ্যাকসিন উৎপাদনে সম।
যারা বাংলাদেশে আসা ভ্যাকসিন নিয়ে গুজব রটাচ্ছেন তারা বোধহয় জানেন না, হেপাটাইটিস বি, বিসিজি, সোয়াইন ফু ভ্যাকসিন, ইনফুয়েঞ্জা, সাপের কামড়ের প্রতিষেধকসহ বহু ভ্যাকসিন সেরামের তৈরি। আরও বলে রাখি, এটা ফাইজারের তৈরি টিকার মতোই কার্যকর এবং এর চাহিদা এখন বিশ্বব্যাপী। ফাইজার তাদের টিকা তৈরি করে চাহিদা কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাই ব্রিটেনে ফাইজারের টিকার সঙ্গে অক্সফোর্ডের টিকাও দেওয়া হচ্ছে।
সরকারের সব সাফল্যকে ম্লান করে দেওয়ার অপতৎপরতায় ব্যস্ত থাকা মহল বরাবরের মতো করোনা মোকাবিলায় সরকারের সফলতাকে নস্যাৎ করতেই মাঠে নেমেছিল নানা ধরনের অমূলক ও অবৈজ্ঞানিক শঙ্কার গুজব ছড়িয়ে। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনার কারণে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মোট আর্থিক পরিমাণ এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা (জিডিপির ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ)। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ প্রকাশিত ‘কোভিড রেজিলিয়েন্স র্যাংকিং’ অনুযায়ী প্রাণঘাতী এই ভাইরাস মোকাবিলায় দণি এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। এছাড়া বিশ্ব র্যাংকিংয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর চেয়েও এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ব তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আমাদের যে সফলতা, তাতে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীসহ গণমাধ্যমকর্মীদেরও বিশাল ভূমিকা আছে। গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন এবং একইসঙ্গে জনগণের কাছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের সচেতনতামূলক বার্তাগুলোও পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়াও প্রশাসন, পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগের সবাই সাহায্য করেছেন। বলা যায়, গোটা জাতিই একটা বিশাল ভূমিকা রেখেছে করোনা নিয়ন্ত্রণে। পুরো জাতির সাফল্যকে ধূলিসাৎ করতে ভ্যাকসিন নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছিল, যা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে গেলো।
২৭ জানুয়ারি বহু কাঙ্তি এই টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করার দিনে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক, সাংবাদিকসহ আরও ২৫ জন টিকা নিয়েছেন। পরদিন ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ টিকা গ্রহণ করেন। টিকাদানের পর এসব ব্যক্তিকে এক সপ্তাহ পর্যবেণ করা হয়েছে। দেখা গেছে, তাঁদের অধিকাংশই ভালো আছেন। কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আজ অত্যন্ত আনন্দঘন মুহূর্তে সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হলো।
করোনার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে ভ্যাকসিনের স্বপ্ন দেখতেন বিশ্ববাসী তা এখন আমাদের হাতে। এটি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং কূটনৈতিক সফলতা। প্রধানমন্ত্রী অকল্পনীয় দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন এনে দিয়েছেন। যার সুফল বাংলাদেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে কথা দিয়েছিলেন যে ভারতের মানুষ যখন ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশের মানুষও তখন পাবে। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। ২১ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ভারতের উপহার হিসেবে ঢাকায় পৌঁছেছে। পাশাপাশি ভুটানে দেড় লাখ, নেপালে ১০ লাখ, মালদ্বীপে ১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ পাঠিয়েছে ভারত। চুক্তি মোতাবেক সেরাম ইনস্টিটিউট ইন্ডিয়া ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালান হিসেবে ৫০ লাখ ডোজ পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন আজ সারাদেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হলো। প্রতিদিন দুই লাখ মানুষ টিকা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ হিসাবে প্রথম দুই মাস প্রতি মাসে ৬০ লাখ মানুষ টিকাদানের আওতায় আসবে। করোনাভাইরাসের টিকা পেতে নিবন্ধন করতে হবে ‘সুরা’ নামে একটি অ্যাপে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এই অ্যাপটি তৈরি করে ২৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করেছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এর ওয়েবসাইট হচ্ছে িি.িংঁৎড়শশযধ.মড়া.নফ।
পরের মাসগুলোতে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ দেওয়া হবে। জাতীয়ভাবে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতির পরিকল্পনা অনুযায়ী সারাদেশে সাড়ে ছয় হাজার কেন্দ্রে করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণ করা হবে। এরমধ্যে রয়েছে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ১০ ও ২০ শয্যার হাসপাতালে ৬০০ কেন্দ্র, জেলা সদর হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল মিলে আরও ৪০০, সিটি করপোরেশন এলাকার বিশেষায়িত হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়, নগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ৮০০, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল।
হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, সচিবালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সংসদ সচিবালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলে আরও ১০০ টিকাদান কেন্দ্র থাকবে। শুরুর দিকে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। ২০ হাজার ৮০০ স্বাস্থ্যকর্মী টিকা প্রয়োগে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবেন। তাদের সহায়তার জন্য ৪১ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। সারাদেশের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা বহনে পাঁচ হাজার ৪৬৯ জন বহনকারী এবং আট হাজার ৮৬৯ জন সুপারভাইজার থাকবেন।
অ্যাপসের মাধ্যমে যারা নিবন্ধন করতে পারবেন না তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। অ্যাপসে নিবন্ধন না করার পরও কেউ টিকাকেন্দ্রে গেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তাদের সহায়তা করবেন। এজন্য প্রত্যেকটি টিকাদান কেন্দ্রে পৃথক টিম কাজ করবে।
টিকা সংগ্রহে বাংলাদেশ বিশ্বে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। কোভ্যাক্স (কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্লোবাল এক্সেস ফ্যাসিলিটি) থেকে বাংলাদেশ আগামী জুন নাগাদ ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এরমধ্যে কোভ্যাক্স বাংলাদেশকে ৮ লাখ ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন দিতে চেয়েছে। বাংলাদেশ সম্মতি প্রদান করে সংগ্রহের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার নিজেদের প্রচেষ্টায় এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা দ্রুত ভারত থেকে এই টিকা আনার ব্যবস্থা করে কতটা ভালো কাজ করেছে, তা বোঝা যায় এই ভ্যাকসিন নিয়ে সারা বিশ্বে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে তা দেখে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফাম ইতোমধ্যে অভিযোগ তুলেছে, ধনী দেশগুলো তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভ্যাকসিন কিনে নিয়ে মজুত করার ব্যবস্থা করেছে। নিজ দেশের বাড়তি প্রয়োজন মেটানো, বাজারে টিকার কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করা এবং উচ্চমূল্যে ভবিষ্যতে তা বিক্রি করে মুনাফা অর্জন এই মজুতের উদ্দেশ্য। অক্সফাম আশঙ্কা করছে, ফাইজার ও অক্সফোর্ড যত টিকাই তৈরি করুক, ধনী দেশগুলো তা কিনে মজুত করে শিগগিরই বিশ্বে টিকা সংকট সৃষ্টি করবে। এদিক থেকে ভারতে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকা যথাসময়ে সংগ্রহের ব্যবস্থা করে সরকার দূরদৃষ্টির প্রমাণ দিয়েছে। অন্য অনেক দুর্যোগের মতো করোনাও বাংলাদেশ মুন্সিয়ানার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারছে। এেেত্র বাংলাদেশের প্রশংসায় বিভিন্ন দেশ সরব।
পৃথিবীর সেরা সেরা কিছু মাথা করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করেছে, গ্রহণ করছে দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ। এর কারণ, বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ অযথা ঘৃণা কিংবা মিথ্যা তথ্যের যুগ নয়। সম্মুখ সারির যোদ্ধাসহ মন্ত্রী, সচিব, বিভিন্ন দফতরের প্রধানদের টিকাগ্রহণ অভয় দিচ্ছে সাধারণ মানুষকে, দ্বিধা সংশয় কাটিয়ে বাড়ছে আগ্রহ। টিকা নিয়ে সবার প্রত্যাশা, অপপ্রচারে বিভ্রান্তি নয়, বরং বিজ্ঞানের হাত ধরেই মহামারির ছোবল থেকে বাঁচবে দেশ, বাঁচবে মানুষ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতএব, ফেসবুকের গুজবে নয়, পূর্ণ তথ্যে ভরসা রাখুন। বিজ্ঞানে আস্থা করুন। ভ্যাকসিনেই নিশ্চিন্ত থাকুন।
লেখক: সিনিয়র তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, ঢাকা।