
জাতীয়
দল নিউজিল্যান্ডে। ৮ দিন পর শুরু প্রথম টেস্ট। তা ছাপিয়ে এ মুহূর্তে 'টক
অব দ্য কান্ট্রি' আকরাম খানের ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান পদ থেকে সরে
দাঁড়ানো। শুরুটা সবার সামনে এসেছে আকরাম খানের স্ত্রী সাবিনা আকরামের
ফেসবুক স্ট্যাটাসে। হুট করেই সোমবার বিকেলে আকরামপত্নী ফেসবুকে এক
স্টাটাসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান পদ
থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আকরাম খান। এরপর থেকেই ক্রিকেট পাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়।
দিনভর
আকরাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি গণমাধ্যম কর্মীরা। মঙ্গলবার
সন্ধ্যায় বাসার নিচে গণমাধ্যম কর্মীরা ভিড় জমান আকরাম খানের প্রতিক্রিয়া
জানতে। শেষ বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আকরামও গাইলেন স্ত্রীর সুরেই
গান। পারিবারিক সিদ্ধান্ত পুরোটাই, তবে চূড়ান্ত কথা বলতে চান প্রস্তুত
হয়েই।
আকরাম খান জানালেন, 'এটা একটা পারিবারিকভাবে নেওয়া সিদ্ধান্ত। ৮
বছর ধরে আমি এই পদে আছি। তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, যিনি
বিসিবিতে ভালো মন্দ সবকিছুতে আমার অভিভাবকের মতো ছিলেন, তার সাথে কথা বলে
তার মতামত নিয়েই আমি চুড়ান্তভাবে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানাতে চাই।'
কিন্তু
আকরাম খানের বিষয়ে যখন কথা বললেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, তখন
শোনা গেল অন্য কথা। বিসিবি সভাপতি বলেন, 'প্রথম কথা হচ্ছে আমরা এখনো কমিটি
কাউকে দিইনি, কমিটি তৈরি করিনি (নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ
গঠিত হওয়ার পর)। কাজেই এটা ছাড়বে কী? আর যেটাতে ছিল, ওটা তো শেষ। শেষ হওয়ার
পর আবার ছাড়া যায় নাকি?'
নতুন কমিটি ঘোষণার ব্যাপারও আছে এখন। সেটিই
শুক্রবারের বোর্ড সভায় করা হবে বলে জানিয়েছেন নাজমুল। অর্থাৎ আরো এক দিন
অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আকরামকে। নাজমুল জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখনো কিছুই
ভাবেননি তিনি। সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার নেবেন আগামীকালের সভায়।
প্রশ্ন উঠেছে, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান থেকে সরে দাঁড়ানোর মূল কারণ কি শুধুই পারিবারিক নাকি এর পেছনেও আরও কারণ আছে?
২০১৪
সালে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে নির্বাচিত কমিটিতে প্রথমবার ক্রিকেট
পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব পান আকরাম। পরের বছরের অক্টোবরে সতীর্থ নাঈমুর
রহমান দুর্জয়ের কাছে পদ হারান তিনি। এরপর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবারও ওই
পদ ফিরে পান।
ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান পদে আকরাম যে খুব
সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা বলার উপায় নেই। গত কিছুদিন ধরে
বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক প্রশ্ন চলছে। গুঞ্জন আছে, নতুনভাবে এ
বিভাগের দায়িত্ব নাও পেতে পারেন তিনি।
অভিযোগ আছে, টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপে দলনেতা হয়ে আরব আমিরাত গিয়ে ভিন্ন হোটেলে ছিলেন আকরাম। তার জাতীয়
দলের বাইরে অবস্থান এবং সেভাবে দলের খোঁজখবর না রাখা নিয়েও অনেক
কথাবার্তা হয়েছে। জাতীয় দলের একাধিক সাবেক অধিনায়কও প্রকাশ্যে সেই টিম
লিডারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। সেটা আকরামের ভালো লাগেনি, যা খানিক
বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টির পাশাপাশি কিছুটা অস্বস্তিরও কারণ। তাই স্বেচ্ছায়
সরে দাঁড়ানোর চিন্তা আকরামের।