
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হিরাবেন মোদীর কাছে সাহায্য চেয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন পাঞ্জাবের কৃষক হারপ্রীত সিং।
ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়া হারপ্রীত গত বুধবার শিমলা থেকে গ্রেপ্তার হন। যদিও একদিন পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মায়ের কাছে একটি খোলা চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেন।
শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়া কে হারপ্রীত বলেন, কৃষি সংস্কারের নামে গত বছর সেপ্টেম্বরে মোদী সরকার তিনটি কৃষি আইন পাস করেছে।
‘‘আমি প্রধামন্ত্রীর মাকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছি যেন তিনি নিজের ছেলেকে ওই তিনটি আইন বাতিল করতে বলেন। কেউ তার মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারে না।”
হারপ্রীত তার চিঠিতে লেখেন, ‘‘প্রিয় মা, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আপনার ছেলে। আমার মনে হয় তিনি আপনার কথা ফেলতে পারবেন না। দয়া করে হাজার হাজার কৃষককে সাহায্য করুন, যারা কৃষক বিরোধী আইন বাতিলের দাবিতে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে দিল্লি সীমান্তে অবস্থান নিয়েছেন।”
থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে নিজ জেলা ফিরোজপুরে ফিরে যান হারপ্রীত। তিনি জানান, শিগগিরই তিনি ওই চিঠি পোস্ট করবেন।
হারপ্রীত ছাড়াও বুধবার পাঞ্জাবের মোহালি জেলার করণদীপ সন্ধু ও চন্ডিগড়ের গুরপ্রীত সিংকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভারতে ৩ কৃষি আইনে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
ভারতের কৃষক আন্দোলন: অচলাবস্থা কাটেনি, বুধবার ফের বৈঠক
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, শিমলার ‘দ্য রিজ রোড’ এ অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ আয়োজন করার অভিযোগে তাদেরকে আরপিসি ১০৭ এবং ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়।
নতুন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে গত বছর শেষ দিক থেকে ভারতীয় কৃষকরা টানা আন্দোলন করে যাচ্ছে। পাঞ্জাব থেকে শুরু হওয়া ওই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা রাজধানী দিল্লিতে প্রবেশ করতে চাইছে। কিন্তু দিল্লি সীমান্তেই তাদের আটকে দেওয়া হয়েছে। শীত মৌসুমে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেই কৃষকরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। যতদিন পর্যন্ত সরকার ওই তিন আইন বাতিল না করবে ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
সরকারের সঙ্গে কৃষক নেতাদের কয়েক দফা বৈঠক হলেও সংকটের সমাধান আসেনি।
ভারতী কৃষকদের আশঙ্কা, নতুন কৃষি আইনের ফলে সরকার আর ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে বাধ্য থাকবে না। বাজারের উপর সরকারের নজরদারিও কমে যাবে। ফলে বাজারের নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বড় বড় ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির হাতে চলে যাবে এবং কৃষকদের জীবন তাদের দয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
গত ১২ জানুয়ারি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নতুন তিনটি কৃষি আইন বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।