| শিরোনাম: |
ভাষাসৈনিক আলী তাহের
মজুমদার আর
নেই। আজ
শনিবার সকালে
কুমিল্লার সদর দক্ষিণের চাঁণপুরে নিজ
বাড়িতে বার্ধ্যক্যজনিত
কারনে মৃত্যুবরন
করেছেন ৫২’র ভাষা
আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে
অংশ নেয়া
এই বিপ্লবী।
১০৬ বছর
বয়সী আলী
তাহের মজুমদার
তার সংগ্রামী
জীবনে বৃটিশ
বিরোধী আন্দোলন,
ভাষা আন্দোলন,
ছয় দফা
আন্দোলন এবং
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
আলী তাহের মজুমদার
১৯১৭ সালে
১২ ফেব্রুয়ারি
জন্মগ্রহন করেন। বাবার নাম চারু
মজুমদার ও
মা সাবানী
বিবি। মত্যুকালে
তিনি ২
ছেলে ২
মেয়েসহ অসংখ্য
শুভানুধ্যাযী রেখে গেছেন।
আলী তাহের মজুমদারের
সংগ্রামী দিন:
চাঁদপুর প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের পর কুমিল্লা জিলা স্কুলে
দশম শ্রেণি
পর্যন্ত পড়াশোনা
করেছেন আলী
তাহের মজুমদার।
ছাত্রাবস্থায় ১৯৩৫ সালে কংগ্রেসের রাজনীতির
সঙ্গে যুক্ত
হন। ১৯৪২
সালে ভারত
ছাড়ো আন্দোলনে
সক্রিয় অংশ
নেন। দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের সময় অষ্টম পাঞ্জাব আর্মিতে
যোগ দিলেও
সাত-আট
মাসের প্রশিক্ষণ
শেষে ছুটিতে
এসে আর
ফিরে যাননি।
তখন তাঁর
বিরুদ্ধে জারি
হয় গ্রেপ্তারি
পরোয়ানা। তাঁকে
বাঁচাতে কুমিল্লার
তখনকার জেলা
প্রশাসক আবদুল
মজিদ ও
পুলিশ সুপার
কার্যালয়ের মোজাফ্ফর হোসেন ভূইয়া ফেনীতে
জাপানি বাহিনীর
বোমায় আলী
তাহের মজুমদার
নিহত হয়েছেন
বলে প্রতিবেদন
পাঠিয়ে দেন।
ওই সময়ে
নেতাজি সুভাষ
বসুর গুপ্তচর
হিসেবে কাজ
শুরু করেন
আলী তাহের
মজুমদার। কুমিল্লা
ও ফেনীতে
বিলি করেন
সুভাষ বসুর
লিফলেট।
দেশ ভাগের আগে
আগে ১৯৪৬
সালে নোয়াখালীতে
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলে কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক
দাঙ্গাবিরোধী কমিটি গঠন করেন। ১৯৪৬
সালের এক
দিন কলকাতার
এক চা
দোকানে আড্ডা
দেওয়ার সময়
জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে
পরিচয় হয়
আলী তাহের
মজুমদারের। তাঁর মুখেই আলী তাহের
জানতে পারেন
বাংলা ভাষাভাষী
এলাকা নিয়ে
বাংলাদেশ করার
কথা।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
ও শরৎ
বোসের পরিকল্পিত
বাংলা ভাষাভাষী
এলাকা নিয়ে
স্বাধীন সরকার
গঠনের জন্য
কাজও করেছেন
আলী তাহের।
দেশ ভাগের
পর ১৯৪৮
সালের ২৩
ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দু ও
ইংরেজির পাশাপাশি
বাংলাকে অন্যতম
ভাষা হিসেবে
স্বীকৃতি দেওয়ার
দাবি তোলেন
কুমিল্লার গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ
দত্ত। তখন
ভাষা আন্দোলন
ছড়িয়ে পড়ে।
আলী তাহের মজুমদার
তখন আরএসপি
(রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি) করতেন। ওই
অফিসে বসে
ভাষা আন্দোলনের
লিফলেট-পোস্টার
লিখে বিলি
করতেন। কুমিল্লা
পৌরসভার সাবেক
চেয়ারম্যান ও বিপ্লবী অতিন্দ্র মোহন
রায়ের সঙ্গে
যোগাযোগ রেখে
চালাতেন আন্দোলন।
বায়ান্নর ২১শে
ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মিছিলে গুলি হলে
তা অতীন
রায়ের মাধ্যমে
জানতে পারেন।
এ ঘটনা
ছড়িয়ে পড়লে
বিক্ষোভে ফেটে
পড়ে কুমিল্লার
মানুষ। আলী
তাহের মজুমদার
মিছিল করার
সময় কুমিল্লা
শহরের রাজগঞ্জে
গ্রেপ্তার হন। পরদিন তাঁকে ছেড়ে
দেওয়া হয়।
এর আগেও
দুই দফা
গ্রেপ্তার হয়েছেন আলী তাহের মজুমদার।