কুমিল্লায়
শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ ইলেকট্রনিক হর্ণ। অটোরিকশা, ইজিবাইক ও
সিএনজিচালিত রিকশায় ব্যবহার হচ্ছে এই হর্ন। একসময় রিকশায় টুংটাং শব্দের
বেলের ব্যবহার থাকলেও- প্যাডেল চালিত রিকশা থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশায়
রূপান্তরের সাথে সাথে রূপান্তর আসে এই হর্ণেও। যানবাহনে আধুনিকায়ন হলেও এই
হর্ণ এখন কুমিল্লার মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাসে নিরব ঘাতক। ব্যাটারিচালিত
রিকশার ইলেকট্রিক হর্নের এক বিপে ৯০ ডেসিবল মাত্রা এবং সিএনজি অটোরিকশা
থেকে ৮৫ ডেসিবল মাত্রার শব্দ তৈরি হয় বলে জানা গেছে। কিন্তু সাধারণত ৪৫
থেকে ৬০ ডেসিবল মাত্রার নিয়মিত শব্দ মানুষের শ্রবণ শক্তি হ্রাস করার অন্যতম
কারণ।
একটি জরিপে দেখা গেছে, নগরীর কান্দিরপাড় নিউ মার্কেটের সামনে
শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ৯০ ডেসিবল ও সর্বনিম্ন ৭৫ ডেসিবল, লিবার্টি মোড়ে
সর্বোচ্চ ৯৩ ডেসিবল ও সর্বনিম্ন ৭৯ ডেসিবল, পূবালী চত্বরে সর্বোচ্চ ৯২
ডেসিবল থেকে সর্বনিম্ন ৮১ ডেসিবল। এসব শব্দের উৎপত্তিস্থল কুমিল্লা নগরীতে
চলা সকল অটোরিকশা ও ইজিবাইক।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে এপর্যন্ত কুমিল্লায়
যত অভিযান বা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তা শুধু মাত্র হাইড্রোলিক হর্নের
বিরুদ্ধে। কিন্তু অটোরিকশা বা ইজিবাইকে যে ইলেকট্রনিক হর্ণ মাত্রাতিরিক্ত
শব্দ উৎপাদন করে- তা নিয়ে কেউই কিছু বলছে না। শহরের অভ্যন্তরে যে শব্দদূষণ
হয় তা সেসব ছোট যানবাহনের ইলেকট্রনিক হর্ণ থেকেই। আর মহাসড়কে ভারী
যানবাহনেই সাধারণ হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার হয়।
চিকিৎসকরা জানান, শব্দ
দূষণের কারণে মানুষ যে কানে কম শুনে সেটা অনুধাবন করতে পারেন খুবই ধীর
গতিতে। শব্দ দূষণ শুধু কানেই সমস্যা তৈরী করে না- একই সাথে হৃদরোগ ও মানসিক
সমস্যাও তৈরী করতে পারে।
কুমিল্লার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক
শওকত আরা কলি জানান, মান মাত্রা অতিরিক্ত করা যে কোন হর্ণই নিষিদ্ধ। সবাই
হাইড্রোলিক হর্ণ নিয়ে ভাবলেও- ইলেকট্রনিক হর্ণও মারাত্মক শব্দ দূষণ করে।
ট্রাফিক বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত কাজ করলেই কুমিল্লা থেকে শব্দ
দূষণ কমানো সম্ভব।
কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল চৌধুরী
টিপু বলেন, সাধারণত হাইড্রোলিক হর্ণের বিরুদ্ধে আইন আছে। কিন্তু সাধারণ
ইলেকট্রনিক হর্ণের বিরুদ্ধে তেমন কোন আইন নাই। তারপর যেসব হর্ণ স্বাস্থ্যের
জন্য ক্ষতিকর শব্দ উৎপাদন করে সেগুলোই নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। পরিবেশ অধিদপ্তর
চাইলে আমরা কুমিল্লা থেকে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রন করতে একসাথে কাজ করতে পারি।