রণবীর ঘোষ কিংকর।
শারদীয়
দূর্গোৎসবের আর মাত্র ৬ দিন বাকি। প্রতিটি পূজামণ্ডপে প্রতীমা তৈরিতে
ব্যস্ত সময় পার করছেন মূর্তি তৈরির কারিগররা। কি দিন আর কি রাত সমানতালে
কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কাজ সমাপ্ত করতে পারবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ওই মৃৎশিল্পীরা।
কেউবা মণ্ডপেই তৈরি করছেন দুর্গা প্রতীমার কাঠামো। আবার কেউবা কারখানা থেকে তৈরি করা প্রতীমা কিনে এনে স্থাপন করবেন নিজ পূজামণ্ডপে।
কুমিল্লার
চান্দিনা উপজেলা সদরের সাহাপাড়া ও বরকামতা এলাকায় মূর্তি তৈরীর বড় দুটি
কারখানা। ওই দুটি কারখানায় অন্তত ২০ জন কারিগর দিনরাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে
ওই কারখানা গুলো ঘুরে দেখা গেছে- কেউবা মুর্তিতে মাটির প্রলেপ দিচ্ছেন,
কেউবা মেশিনে রং মাখছেন আবার কেউবা তুলির আঁচড়ে প্রতিমার চোখ ও মুখমন্ডল
আপন মনে ফুটিয়ে তুলছেন।
প্রতীমা তৈরির কারিগররা জানান, দুর্গাপূজা শুরু
হওয়ার অন্তত ২/৩ মাস আগ থেকেই কারখানায় কাজ শুরু হয়। বাঁশ, কাঠ, খড় ও
মাটিতে প্রতিটি মুর্তির কাঠামো তৈরিতে অন্তত ১৫/২০ দিন সময়ের প্রয়োজন বিধায়
এবছর পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সফল মৃৎ শিল্পীরা।
সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের
সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে প্রতীমাতেও। অন্যান্য বছরের তুলনায়
মূর্তি তৈরির সরঞ্জাম এর দাম ও কারিগরদের মুজুরি হওয়ায় অন্যান্য যেকোনো
সময়ের তুলনায় এবছর মূর্তি প্রতি বেড়েছে ৫-২০ হাজার টাকা।
কারখানার
মালিক ও প্রধান কারিগর রবীন্দ্র সরকার জানান, এবছর আমি ৩০টি প্রতীমা তৈরি
অর্ডার নিয়েছি। এখন কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অধিকাংশ প্রতীমাই নিয়ে গেছে যার
যার পূজামণ্ডপে। কারখানা থেকে মূর্তিগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় মূর্তির কিছু
কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ডেলিভারি দেওয়ার পরও মণ্ডপে গিয়ে ফিনিশিং দিতে হয়।
কয়েকজন কারিগর এখন মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে কাজ করছেন।
মূর্তির মূল্যবৃদ্ধি
সম্পর্কে তিনি আরও জানান- খড়, মাটি থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম
বেড়েছে। কারিগরদের বেতন ও জনপ্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেড়েছে। আগে যে
প্রতীমা ২৫ হাজার টাকায় অর্ডার নিয়েছি এবছর সেই প্রতীমা ৩০ হাজার টাকায়
নিতে হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতীমার কাঠামো অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত
বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই সবগুলো মন্ডপের প্রতীমা তৈরি
শেষ হবে বলে আশা করছেন ওই কারিগর।
আগামী ১লা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য
দিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এবছর কুমিল্লার ৭৯২টি
পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়
দুর্গা পূজা।