গোলশূন্য
ড্র থেকে বড় ব্যবধানের জয়। ফলাফলে যেমন পার্থক্য, তেমনি পারফরম্যান্সের
উন্নতিটা ফুটে উঠেছে ব্রাজিলের খেলাতেও। প্রথম ম্যাচ থেকে দ্বিতীয় ম্যাচের
এমন উন্নতি দারুণ খুশি কোচ দরিভাল জুনিয়র। তার আশা, পরের ম্যাচে আরও ভালো
খেলতে পারবে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের পারফরম্যান্সে ভাটার টান ছিল অনেক দিন
ধরেই। কোপা আমেরিকার শুরুটাও তাদের হয় হতাশাজানক। কোস্টা রিকার সঙ্গে
পয়েন্ট ভাগাভাগি করার ম্যাচে জালের দেখা পায়নি তারা। আগে থেকে চলতে থাকা
সমালোচনাগুলোও তাই উচ্চকিত হয় আরও।
তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই জ্বলে উঠেছে
তারা। দারুণ ফুটবল উপহার দিয়ে প্যারাগুয়েকে হারিয়েছে তারা ৪-১ গোলে। রেয়াল
মাদ্রিদের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করলেও ব্রাজিলের জার্সিতে ম্রিয়মান বলে
যার দিকে আঙুল উঠছিল, সেই ভিনিসিউস জুনিয়র নান্দনিক ফুটবল উপহার দিয়ে
করেছেন জোড়া গোল।
প্রথম ম্যাচের পর দলের পাশে দাঁড়িয়ে দরিভাল বলেছিলেন,
একটু সময় লাগবে সব গুছিয়ে নিতে। সমর্থকদের ধৈর্য ধরার অনুরোধও তিনি
করেছিলেন। শনিবার বাংলাদেশ সময় সকালে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বড় জয়ের পর সেই
কথাগুলিই মনে করিয়ে দিলেন ব্রাজিল কোচ। এত দ্রুত উন্নতি করতে পারায় দারুণ
খুশি তিনি।
“প্রথম ম্যাচের ফলাফলে একটা পর্যায়ের হতাশা সবার মধ্যেই ছিল।
তবে আজকের ম্যাচের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ পর্যায়ে। খুব কম সময়ে অনেক
উন্নতি করতে পেরেছি আমরা। ২০ দিন একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ আমরা কখনোই
পাইনি।”
“আমি বলেছিলাম ধৈর্য ধরতে। দেখুন, এই দল সঠিক পথেই আছে।”
দুই
ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল। পরের
ম্যাচে কলম্বিয়ার সঙ্গে ড্র করতে পারলেই পরের ধাপে যেতে পারবে তারা।
ব্রাজিলের
মতো দলের অবশ্য ড্রয়ের জন্য কোনো ম্যাচে খেলার কথা নয়। তবে কলম্বিয়ার
বিপক্ষে কাজটি সহজও হবে না। টানা ২৫ ম্যাচ অপরাজিত আছে তারা। গত নভেম্বরে
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তারা হারিয়ে দিয়েছিল ব্রাজিলকে। এবার কোপা আমেরিকায়ও টানা
দুই জয়ে তারা গ্রুপের শীর্ষে আছে।
তবে দরিভালের আশা, প্রথম দুই ম্যাচের চেয়েও কলম্বিয়ার বিপক্ষে আরও ভালো খেলবে তার দল।
“আমার
মনে হয়, আরেকটু কঠিন লড়াইয়ের ম্যাচ হবে এটি। পরস্পরের সঙ্গে অনেক খেলা হয়
বলে সবাই সবাইকে চেনে-জানে। আমার কোনো সংশয়ই নেই যে ব্রাজিল সর্বোচ্চ
পর্যায়ের খেলা উপহার দেবে এবং আমার আশা, প্রথম দুই ম্যাচের চেয়েও ভালো কিছু
হবে।”
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে মারা যান দরিভালের
চাচা, সাবেক ফুটবলার ও কোচ দুদু। জয়ের পর তাই আবেগময় হয়ে পড়েন ব্রাজিলের
কোচ। কান্নাভেজা কণ্ঠে জানান তার জীবনে চাচার ভূমিকা কত বড়।
“ফুটবলার,
কোচ ও একজন মানুষ হিসেবেও দুদু ছিলেন আমার আদর্শ। সবসময়ই অন্যদের ভাবনায়
কাতর থাকতেন তিনি, নিজেকে নিয়ে একদমই ভাবতেন না। আমার জন্য তিনি ছিলেন
সবসময়ের আদর্শ। সবসময় তা অনুসরণ করতে চেয়েছি। আমার কাছে তিনি অনেক বড়
একজনৃতার মতো কাউকে জীবনে আর দেখিনি। আমার বাবার মতো ছিলেন, জীবনের প্রতিটি
ধাপে আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন।”