‘আইন ধনীদের জন্য বেশি এগিয়ে চলে’
Published : Friday, 7 October, 2022 at 12:00 AM
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেছেন, আইন ধনীদের জন্য বেশি এগিয়ে চলে। এর কারণ হলো ধনীদের অর্থ আছে। তারা ভালো আইনজীবী রাখতে পারে। ভালো অর্থ আইনজীবীর পেছনে খরচ করতে পারে। যে কারণে আইন ধনীদের দিকে বেশি ধাবিত হয়। এটাই বাস্তব। আর গরীবের অর্থ নেই। ফলে আইন তাদের পক্ষে অনেক সময় থাকে না। কারণ তারা ভালো আইনজীবী রাখতে পারে না। এ কারণেই সরকার অসহায়, দুস্থ ও গরিব বিচারপ্রার্থীদের আইনি সেবা দেওয়ার জন্য ২০০০ সালে লিগ্যাল এইড প্রতিষ্ঠা করে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘লিগ্যাল এইড ইন বাংলাদেশ: সার্ভ হিউম্যানিটি অ্যান্ড সেভ সোসাইটি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিচারপতি এ কথা বলেন। লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল এই সেমিনারের আয়োজন করে।
এসময় চাকরি থেকে অবসরে গেলে নিজেকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে লিগ্যাল এইডের জন্য যুক্ত থাকার ঘোষণা দেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম।
তিনি আরও বলেন, লিগ্যাল এইড আইন প্রণয়নের পর আজ ২২ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু দেশের মানুষের মধ্যে লিগ্যাল এইড নিয়ে ধারণা কম। গ্রামের মানুষ এখনও জানে না লিগ্যাল এইড কিভাবে কাজ করে। লিগ্যাল এইডের ধারণা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে আইনের চোখে সবাই সমান। সকলেই আইনের আশ্রয়লাভের অধিকারী। কিন্তু আমার মনে পীড়া দেয় আদৌ কি আমরা ইক্যুয়াল প্রটেকশন পাচ্ছি? দুঃস্থ বিচারপ্রার্থীদের কি ঠিকমত লিগ্যাল সাপোর্ট দিতে পারছি? আমার মতে, পারছি না।
তিনি বলেন, আমি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই আমি কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে বন্দিদের বক্তব্য শুনেছি। যাদের লিগ্যাল এইড দেওয়া দরকার তাদের নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া কিশোর সংশোধনাগারে গিয়েছি। অপরাধে জড়িয়ে শিশুরা সেখানে বন্দি। এ বয়সে যাদের বাবা-মায়ের কাছে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সমাজ সচেতন না হওয়ার কারণে শিশুদের এই দুরবস্থা।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ, লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল ওয়াহহাব, লায়ন জালাল আহমেদ, লায়ন মোহাম্মদ হানিফ, লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা জজ ফারাহ মামুন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলী, অ্যাডভোকেট মুনমুন নাহার, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ফারজানা শম্পা ও তামান্না ফেরদৌস প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তেজগাঁও কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক আঞ্জুমান আরা।