Published : Monday, 3 October, 2022 at 12:00 AM, Update: 03.10.2022 12:29:48 AM

কুবি প্রতিনিধি ।।
‘যশোর
পর্যন্ত এখন কীভাবে যাব, সেই চিন্তায় আছি। হঠাৎ হল ছাড়ার সিদ্ধান্তে
বিপাকেই পড়েছি। এখনও টিউশনের টাকা হাতে আসে নাই, টিউশন মিস দিলে টিউশনও চলে
যাবে। বাহিরে থাকার মত কোন জায়গা নাই। তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে
তো কিছু করার থাকে না। তাই আর কোনো বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’
আরিফ (ছদ্মনাম) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভোগের এক শিক্ষার্থী হল ছাড়ার সময় এসব কথা বলেন।
রোববার
(২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক
চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত
হল ছাড়ার নির্দেশের পরই হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের
উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পরবর্তী যেকোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধ এবং
সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশ না
দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ বন্ধ রাখাসহ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে
ছাত্রদের ও আগামীকাল সকাল ৯টার মেয়েদেরকে হল ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া
হয়।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সবুজ মাহমুদ
বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল একটা দিন সময় দেওয়া, দূরে যাদের
বাসা তারা হুট করে কোথায় যাবে? বাস বা ট্রেনের টিকিট পাওয়া নিয়ে অনেকের
মধ্যে আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মানজুরুল
ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর জন্য এটা চরম ভোগান্তির। রংপুর সদরের টিকিট পেলে
বাড়ি চলে যাব। আর না পেলে কী করব, তা এখনো ভাবিনি।’
আইসিটি বিভাগের ৪র্থ
বর্ষের শিক্ষার্থী মিথু (ছদ্মনাম) উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, করোনার জন্য
অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এত দিন তো পড়ালেখা শেষ হয়ে যেত। সামনে পরীক্ষা তাই
বাড়ি যায় নাই। এখন নাটোর যাওয়াটা আমার জন্য কষ্টদায়ক। প্রশাসান কেন জড়িতদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে হল বন্ধের নির্দেশ দিলো বুঝলাম না! তাহলে কি
তাদের কে প্রশ্রয় দেওয়া নয়!
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্রলীগের কমিটি 'বিলুপ্তি'কে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার (১ অক্টোবর)
ছাত্রলীগের দুই পক্ষ অস্ত্র মহড়া দেয় ক্যাম্পাসে। এসময় প্রশাসনের নিরব
ভূমিকায় দেশীয় অস্ত্র, ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করে। এ নিয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।