
অনলাইন
গ্যাম্বলিং সাইট ‘বেটউইনার ডটকম’ পরিচালনায় জড়িত তিন বাংলাদেশি এজেন্টকে
গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি। কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রাম থেকে বুধবার রাতে আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), আব্দুল্লাহ আল আউয়াল
(২৬) ও মো. তোরাফ হোসেন (৩৭) নামের ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির
বিশেষ সুপার রেজাউল মাসুদ বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
“সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শাখার তদন্তের পর
ওই সাইট পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
অনলাইনে বেটিং বা জুয়ার কারবার পরিচালনা করে বেটউইনার, যদিও বাংলাদেশে এর বৈধতা নেই।
সম্প্রতি
বেটউইনারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের অ্যাম্বাসেডর হয়ে সমালোচনায়
পড়েন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। পরে তিনি ওই বেটিং সাইটের
সাথে চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হন।
কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার তিনজন
বেটউইনারের এজেন্ট জানিয়ে রেজাউল মাসুদ বলেন, “গত চার মাসে তারা তিন থেকে
চার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।”
“বাংলাদেশে এ সাইটের দশজন এজেন্ট
রয়েছে বলে তারা পুলিশকে জানায়। আর এজেন্ট হিসেবে তারা প্রত্যেকে এক থেকে
দেড় লাখ টাকা করে কমিশন পেত।”
যেভাবে পরিচালিত হয়:
রেজাউল মাসুদ
বলেন, একজন জুয়াড়ি মোবাইল নম্বর বা ইমেইলের মাধ্যমে ওই সাইটে বা অ্যাপে
অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ওই অ্যাকাউন্টের বিপরীতে একটি ই-ওয়ালেট তৈরি হয়,
যাকে তারা 'ইউএসডিটি' বলে। শুরুতে ব্যালেন্স শূন্য থাকে।
“এই ওয়ালেটে
ব্যালেন্স যোগ করার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংসহ অনেক মাধ্যম রয়েছে; এগুলোর যে
কোনো একটি বেছে নিলে সেখানে একটি এজেন্ট নম্বর দেখায়। ন্যূনতম ৫০০ টাকা
দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে ই-ওয়ালেট বা ইউএসডিটিতে ব্যালেন্স যুক্ত হয়। এ
ব্যালেন্স দিয়েই ওই ব্যক্তি পরে জুয়া খেলতে পারে।“
তিনি বলেন, মোবাইল
ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের এজেন্টরা জমা টাকা তুলে পরে ক্রিপ্টো মুদ্রার
এক্সচেঞ্জ 'বাইন্যান্স' এর মাধ্যমে তা রূপান্তর করে নেয়।
“পরে এই টাকা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যায়। গ্রেপ্তার তিনজনই এই অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”
তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন, এজেন্ট সিম, মার্চেন্ট সিম ও পার্সোনাল সিমসহ মোট ১২টি সিম ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।
বিটিআরসির গেটওয়েতে জুয়ার সাইট বন্ধ থাকলেও 'ভিপিএন' এর মাধ্যমে তারা এই জুয়ার কারবার চালিয়ে আসছিল বলে রেজাউল মাসুদ জানান।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।