ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কাঁচা মরিচের কেজি পৌনে ৩০০ টাকা ছাড়াল
Published : Saturday, 6 August, 2022 at 12:00 AM, Update: 06.08.2022 12:51:21 AM
কাঁচা মরিচের কেজি পৌনে ৩০০ টাকা ছাড়ালবর্ষায় আবাদ ‘কম হওয়ার’ কারণে সরবরাহে ঘাটতি থাকায় চলতি সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে আরও ১০০ টাকা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।
শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজার, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়।
রামপুরা কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহ জালাল বলেন, “হঠাৎ করে বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি (সরবরাহ) অনেক কমে গেছে। আমরা কারওয়ান বাজার থেকে পাল্লা হিসেবে (৫ কেজি) পাইকারি দরে কাঁচা মরিচ কিনে থাকি।
“আজকে প্রতি পাল্লা পাইকারি দরই এক হাজার ২০০ টাকার ওপরে কেনা পড়েছে। এখন আমরা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি করছি ৭০ টাকায়।”
গত কিছু দিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। চলতি সপ্তাহে এর দাম কেজিতে আরও ১০০ টাকা বেড়েছে।
শাহ জালাল বলেন, “গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল। পাইকারি বাজারেই এর সংকট দেখা দিয়েছে, টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।”
শান্তিনগরের সবজি বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, “আবহাওয়াগত কারণে কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, এই কারণে উৎপাদন কমেছে। এখন বাজারে গিয়ে এই সংকট পড়েছে।
“দুই এক দিনের মধ্যে যদি ইন্ডিয়ান কাঁচা মরিচ দেশে আসে তাহলে দাম কমে আসবে।”
কারওয়ান বাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, “বেশি কাঁচা মরিচ আসে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা থেকে, সেখানে ফলন কমে গেছে। পাইকারি বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে দাম চড়েছে।”
মগবাজারের বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, “বাজারে তো সব কিছুর দামই বাড়তি, কোনো সবজিই ৫০ টাকার কমে কিনতে পাওয়া যায় না। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছোঁয়া!
“২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি বলে সামান্য পরিমাণ কিনেছি।”
দেশের সবচেয়ে বেশি মরিচ আবাদ হয় বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায়। ওই জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান বর্ষা মৌসুমে মরিচের আবাদ কমে যায়। তিনি বলেন, “এই সিজনে আবহাওয়া খারাপ থাকে, বৃষ্টি-বাদলের কারণে মরিচ গাছের গোড়া পচন ধরে গাছ মরে যায়।
“কৃষকরা মরিচের চাষাবাদ করে বেশি ভালবান হতে পারে না। এই কারণে বহু কৃষক আবাদ কমিয়ে দেয়। এসব কারণে ফলন কম হয় বলে প্রতি বছরের এই সময়ে কাঁচা মরিচের দামও বেশি থাকে।”
আগামী দেড় থেকে দুই মাস এই অবস্থা চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন করে চাষাবাদ হচ্ছে, তখন নতুন মরিচ বাজারে আসলে দাম স্বাভাবিক হবে।”
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় ডিম এবং মুরগির দামও বেড়েছে। ফার্মের প্রতি ডজন লাল ডিম ১০ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। ব্রয়লার, সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
এদিন প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা। ফার্মের সাদা ডিম ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহের চেয়ে ডজনে পাঁচ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকায় বিক্রি হয়।
শান্তিনগর বাজারের ভাই ভাই ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, “কাপ্তান বাজার থেকে আমরা পাইকারি দরে মুরগি কিনে আনি, সেখানেই দাম বাড়তি। কেনা দাম বেশি হলে তো বিক্রিও সেই অনুসারে করতে হয়।”
কাপ্তান বাজারের পাইকারি মুরগির দোকান শাহিনুর হেন্স হাউসের মালিক ওমর ফারুক জানান, খামারি পর্যায়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরবরাহ কমেছে বলে মুরগি দাম বেড়েছে।
“গরম আবহাওয়ার কারণে ফার্মের ভেতরে মুরগি মারা যায়, এছাড়া মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় বেড়েছে, এই কারণে দাম বাড়তি।”