Published : Sunday, 29 May, 2022 at 12:00 AM, Update: 29.05.2022 12:58:56 AM

কুমিল্লার লাকসামে মুক্তিযোদ্ধা ও কলেজ প্রতিষ্ঠাতার নাম বাদ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা পর্ষদ ছাড়াই অধ্যক্ষের ক্ষমতাবলে লাকসাম মডেল কলেজ (সাবেক ব্রাড মডেল কলেজ)এর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। এমতাবস্থায় আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কমিটি গঠন না করায় বর্তমান অধ্যক্ষকে ২০১৫ সালে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। এছাড়াও চলতি বছরের ১৯ মে হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক কলেজটি সেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ব্রাড’ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিধায় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত দুই বছর জন্য শিক্ষা বোর্ড জারিকৃত প্রবিধান মালা ২০০৯ এর ৪৯ প্রবিধান মোতাবেক সভাপতি মনোনয়নসহ গভর্নিং বডি অনুমোদন দেয়া হয়। গভর্নিং বডি সভাপতি খোদেজা বেগম লীনা, লাকসাম মডেল কলেজ অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে সদস্য সচিব করা হয়। খোদেজা বেগম লিনার অভিযোগ, গত ২৩ মে কলেজে প্রথম গভর্নিং বডির সভা অধ্যক্ষ আবু তাহের অনুপস্থিত থাকেন। এসময় বহিরাগত লোকজন এসে সভায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা অধ্যক্ষের অনুসারী বলেও জানান তিনি।
অভিযোগে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা ও ফেনীর ফুলগাজি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর বশির আহমেদ ‘ব্রাড’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠন করেন। পরে তিনি এবং তার স্ত্রী মিসেস খোদেজা বেগম লিনা তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি ব্রাডকে কলেজ করার জন্য দান করেন এবং শর্ত থাকে যে, কোনদিন এই কলেজের নাম পরিবর্তন করা যাবে না। তারপর ব্রাডের অর্থায়নে ১৯৯৪ সালে ১০৬ শতক ভূমির মধ্যে ব্রাড মডেল কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন । কিন্তু পরবর্তীতে প্রভাবশালী মহল প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে লাকসাম মডেল কলেজের নামে রূপান্তর করে। প্রতিষ্ঠাতা বশির আহমেদ কলেজের নাম পরিবর্তন ও কমিটি গঠনের বিষয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট পিটিশন দায়েরের পর আবেদনকারীর পক্ষে আদালত রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টে রায় ঘোষণার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা চলাকালীন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মৃত্যুর পর কলেজের পাশে তার লাশটি সমাহিত করার জন্য পরিবারের কাছে অসিয়ত করেন। অসিয়ত অনুযায়ী ওই মুক্তিযোদ্ধার লাশ কলেজের পাশে সমাহিত করতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ বাধা প্রদান করে। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কলেজের পাশে লাশ সমাধিস্থ করা হয়। কয়েক মাস আগে প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে কলেজ কর্তৃপক্ষ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি ও শহীদ মিনারের পাশে একটি টয়লেট নির্মাণ করে।
এছাড়াও ২০১১ সালে গঠিত ১২সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ২বছর মেয়াদী কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষ মিলেই অবৈধভাবে চালাচ্ছিলেন এই কলেজের শিক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম। পরে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ওই ৮ বছরের মেয়াদ উত্তীন কমিটি বিগত ২০২১ সালে ভেংগে দেয়।
লাকসাম ব্রাড মডেল কলেজ বা লাকসাম মডেল কলেজে অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন অধ্যক্ষ বশির আহমদ কলেজ প্রতিষ্ঠাতা এবং জমির মালিক এটা সত্যি। আমরা অভিযোগের বিষয়টি তার পরিবারের সাথে সমঝোতা করে নেবো।