ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেবীদ্বারে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত
Published : Sunday, 29 May, 2022 at 12:00 AM
 
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
"মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হবে যেতে" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আয়োজিত নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের আলোচনা সভায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এনামুল হকের সভাপতিত্বে এবং ডাঃ সাদাত ইরতিশামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট নাজমা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মঞ্জুর হোসেন।
প্রধান আলোচক ছিলেন গাইনি কনসালটেন্ট ডাঃ তামান্না সোলায়মান। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন গাইনি চিকিৎসক ডাঃ ফারহানা ইসলাম, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মী মোঃ মহিউদ্দিন বাহারুল, প্রসুতী খুশী বেগম প্রমুখ।
আলোচকরা বলেন, আমরা এখনো প্রসূতী মায়েদের প্রতি করনীয় সম্পর্কে অসচেতন রয়েছি। এখনো আমরা বাচ্চা এবং প্রসূতীকে সুস্থ রাখতে তাবিজ, টোনা, ঝারফুঁক, পানি পড়াসহ সেকেলী কুসংস্কার মুক্ত হতে পারিনি। পেটে বাচ্চা বড় হলে প্রসব যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ার আশংকায় পুষ্টিকর ও আয়রন জাতীয় খাবার থেকে বিরত রাখি। পেটে মোটা রসি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখি বাচ্চা যেন বড় না হয়। স্বামী, শ^শুর-শাশুড়ী, ননদ-জা’য়েরা এখনো চিকিৎসকের নিকট প্রশ্ন রাখেন,- বাচ্চা ছেলে নাকি মেয়ে, কখনো জানতে চাননা  প্রসূতী এবং বাচ্চা সুস্থ আছে কিনা, তাদের সুস্থতার জন্য কি করা উচিত।
আমাদের আগামী প্রজন্মকে সুস্থ, মেধাবী ও কর্মঠ হিসেবে গড়তে মা’ শাশুড়ীসহ সংশ্লিষ্টদের মাতৃকালীন সময়ে প্রসূতীদের প্রতি করণীয় সম্পর্কে সচেতন করে তোলার বিকল্প নেই। তাই মাসিক বন্ধের ৩ মাস থেকে প্রশবকালীন সময় এবং বাচ্চা প্রসবের ৪২ দিন পর্যন্ত নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে। মায়েদের এসময়ে পুষ্টিকর খাবার প্রদান এবং ভারী কাজকর্ম থেকে বিরত রেখে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মীদের প্রসূতীদের তালিকা করে নিয়মিত চিকিৎিসকের পরামর্শ্বে রাখতে হবে এবং তাদের প্রতি করনীয় সম্পর্কে প্রসূতী ও তাদের স্বজনদের নিয়ে সভা-সেমিনারে সচেতন করে তুলতে হবে। কোন ভাবেই পুরনো কৌশলে বাড়িতে দাই দিয়ে প্রসব করা যাবেনা। মাতৃত্বকালীন শিশু ও শিশুর মা’য়েদের মৃত্যুর হার কমাতে এবং তাদের সুস্থ্য রাখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে প্রসব করাতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মীদের এ দায়িত্ব পালনে শতভাগ নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এনামুল হক বলেন, মাতৃত্বকালীন সময়ে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমাতে সরকার নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ১৯৯৭ সাল থেকে ২৮ মে আমাদের দেশে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী প্রতিবছর বাংলাদেশে ১২ হাজার নারী গর্ভধারন ও প্রসবজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করছে। মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আমাদের সরকার ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা প্রসূতীদের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ ঘন্টা সেবাদানের ব্যবস্থা রেখেছি। চিকিৎসক, ঔষধ, পরীক্ষা নিরীক্ষার সমস্ত আয়োজন উপজেলা সরকারি হাসপাতাল গুলোতে রয়েছে। মাঠ কর্মীরাই এসব সুযোগ সুবিধার কথা প্রসূতীদের জানাতে হবে।