ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
সংসারের অভাব ঘুচাতে চান রহিমা
Published : Monday, 28 February, 2022 at 12:00 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল বরকরই গ্রামে বিধবা রহিমার বসবাস। সংসারের অভাব ঘুচাতে স্বামী হারুনুর রশিদকে সৌদী আরব পাঠানোর পর অসুস্থতায় দেশে ফিরেন। স্বামী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল তার। ছোট ছেলে সায়মন এর বয়স যখন ৯ মাস হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে স্বামী হারুনুর রশিদ এর।
বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে মারুমা, মাদ্রাসা পড়ুয়া দুই ছেলে শাহিদুল ও বায়জিদ কে নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বামীহারা রহিমা বেগম। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় বাপের বাড়ির সাহায্যে কাটিয়ে দিয়েছেন ৬ বছর। এখন শিশু সায়মনের ৭ বছর প্রায়।
অনাহারে অর্ধাহারে থেকে বড় ছেলে শাহিদুলকে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করালেও মাধ্যমিকের গন্ডি অতিক্রম করেনি। মায়ের কষ্টের দিনাতিপাতে সামান্য খেয়াল নেই তার। প্রায় ২২ বছর বয়সেও বেকার জীবন-যাপন করেছেন শাহিদুল। দ্বিতীয় সন্তান মারুমাকে বিবাহ দেন বোনের ছেলের কাছে। তৃতীয় সন্তান বায়জিদ পড়ছেন চান্দিনার পিহর মাদ্রাসায়। এমন অবস্থায় সংসারের ঘানি টানতে বেশ হিমশীম খাচ্ছেন রহিমা বেগম।
নিরুপায় হয়ে রহিমা বেগম এর ভাই সাহায্য চেয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। জেলা প্রশাসকও পাশে দাঁড়ান রহিমা বেগম এর। সংসারের অভাব ঘুচাতে সরকারি তহবিল থেকে ৯০ হাজার টাকায় গাভী কিনে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
গাভী পেয়ে খুশিতে আত্মহারা রহিমা। ওই গাভীতে সংসারের অভাব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় তার।
তিনি জানান, অভাবের কারণে ভাইয়ের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হাত পাততে আর ভাল লাগে না। সন্তানরাও বড় হয়েছে। দিনে দিনে খরচও বাড়ছে। চান্দিনার ইউএনও আপা এসে আমার পছন্দমত গরু দেখতে বলছেন। আমি গ্রামের মমিন মিয়ার কাছ থেকে বাছুরসহ গরুটি পছন্দ করি। পরে বৃহস্পতিবার এসে ইউএনও আপা গাভীটি কিনে দিয়ে গেছেন।
গাভী দিয়ে কি করবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সংসারের পাশাপাশি সারাদিন গাভীটির যত্ন করবো। দুধ বিক্রি করে গাভীর খাবার জোগার করবো নিজেরও সংসার চালাবো। চেষ্টা করবো এই একটি গাভী দিয়ে আমার সংসারের অভাব ঘুচাবো।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় ৯০ হাজার টাকা দিয়েছেন। ওই টাকায় রহিমা বেগমকে তার পছন্দমত গাভী কিনে দিয়েছি। একটি গাভী দিয়েই সংসারের অভাব ঘুচানো সম্ভব। আশা করি রহিমা বেগমকে আর পর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবেনা।