Published : Tuesday, 15 February, 2022 at 12:00 AM, Update: 15.02.2022 12:46:28 AM

তানভীর দিপু:
বসন্ত
শুরুর দিনেই বিশ^ ভালোবাসা দিবস। বহু বর্ণের আবির মেখে হাজির হলো ফাগুন।
নগরজুড়ে বয়ে গেল রংয়ের প্লাবন। হলুদ-সবুজ শাড়ি আর লাল গোলাপ মিলেমিশে
একাকার। দিনটিকে রাঙিয়ে নিতে মানুষের উচ্ছ্বাসও ছিলো দ্বিগুণ। করোনা
মহামারি প্রভাব কিছু তাল কাটলেও যাদের জন্য এই দিন তারা ঠিকই উপভোগ করেছেন
রঙিন মুর্চ্ছণা। প্রিয়জনের সাথে কাটিয়েছেন প্রিয় মুহুর্ত। ফুল চকলেটসহ
নানান উপহারে হেসেছে কত নির্মল চেহারা। তরুণ-তরুণ থেকে মধ্যবয়সী কিংবা
শিশুরাও শামিল হলো বসন্তের প্রথমদিন পয়লা ফাগুনের সেই উৎসবে। সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছিলো শুভেচ্ছা বার্তার ছড়াছড়ি। ম্যাসেঞ্জার আর
হোয়াটসএ্যাপেও এসেছে ভালোবাসা আর বসন্তের শুভেচ্ছা।
গতকাল সোমবার পহেলা
ফাল্গুণ এবং বিশ^ ভালোবাসা দিবসের সকাল থেকেই ছিলো দিনটি রাঙিযে নেয়ার
আয়োজন। নগরীর মোড়ে মোড়ে ফুল মুকুটের পসরা বসেছিলো উপহার ছড়াতে। ধর্মসাগর
পাড় আর নগর উদ্যান তরুণ-তরুণীদের সরব উপস্থিতিতে মনে হয় নি করোনা মহামারিতে
আক্রান্ত এই পৃথিবী। রিকশায়, ইজিবাইকে ও মোটরসাইকেলে চড়ে নগর ভ্রমনে
বেরিয়েছেন নানা বয়সী মানুষ। গোমতী নদীর তীরে বেড়াতে গিয়েছেন হাজারো মানুষ,
গায়ে লাগিয়েছেন বাসন্তী হাওয়া। মাথায় লাল-হলুদ-সবুজ ফুলের মুকুট পরা
বাসন্তী শাড়িতে তরুণীরা আর লাল-সাদা পাঞ্জাবীতে তরুণরা-আড্ডায় মুখর হয়েছিলো
বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, রেষ্টুরেন্ট। সবার হাতেই ছিলো ফুল কিংবা অন্য
উপহার।
ধর্মসাগর পাড়ে ঘুরতে আসা ঐন্দ্রিলা সাহা জানান, এই দিনটির জন্য
অনেকেরই অপেক্ষা থাকে। কেউ অপেক্ষা করে বসন্তের, কেউ অপেক্ষা করে ভালোবাসা
দিবসের। কিন্তু এবছর দুইটা দিন একই দিনে পরেছে- তাই ভালো লাগাও দ্বিগুণ।
বাসন্তী শাড়ি পরে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে এসেছি। উপহার পেয়েছি। ভালো লাগছে
খুব।
সাদিয়া ইসলাম জানান, সকালে বন্ধুদের সাথে বের হয়ে ফুলের মুকুট কিনে
পরেছি। তারপর পুরো শহরে রিকশায় ঘুরেছি। নদীর পাড়ে গিয়ে আবার ধর্মসাড়র পাড়ে
এসেছি। বন্ধুরা চকলেট গিফ্ট করেছে। দুর্দান্ত সময় কেটেছে।

শুধু তরুন
তরুণী নয়, পরিবার নিয়ে অনেকেই ঘুরেছেন শহর জুড়ে। এক রঙের পোশাক ছিলো বাবা,
মা, ভাই-বোন সবার। বিশেষ এই দিনে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে
গিয়েছে প্রিয় খাবারের ট্রিট নিয়েছেন অনেকে। নগরীর সুপরিচিত রেষ্টুরেন্টে
গিয়ে কথা হয় শিক্ষক মাহবুবুল আলমের সাথে। তিনি জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে
খেতে এসেছেন এখানে। তার সন্তানরা ভালোবাসা দিবসের উপহার সরূপ বাবা-মাকে
রেষ্টুরেন্টে নিয়ে এসেছে।
এদিকে বসন্তকে বরণ করে নিতে গতকাল জেলা
শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজন করা হয় বসন্ত উৎসব। নাচ, গান,আবৃত্তি আর আড্ডায়
মেতে উঠেন কুমিল্লা সংস্কৃতিমনা মানুষ। অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রশাসনের
উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বরা।
করোনা মহামারির মধ্যে
ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত বরণে সব আয়োজন ছিলো সীমিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক
ব্যবহার করেই দিনটি উদযাপন করে সচেতনরা।