ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করুন
Published : Thursday, 2 December, 2021 at 12:00 AM
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করুন
বাংলাদেশ এরই মধ্যে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি অর্জন করেছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। কিছু উন্নয়নও হয়েছে। কিন্তু এখনো করার অনেক কিছুই বাকি রয়ে গেছে। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের বাস গ্রামে। তারা এখনো জরুরি অনেক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নেই বললেই চলে। অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ সরকারি অনেক হাসপাতালের অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। ভবন আছে, বরাদ্দ আছে, কিছু চিকিৎসা সরঞ্জামও আছে, কিন্তু চিকিৎসা নেই। ঠিক এ রকমই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে। খবরে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ বছর ধরে এক্স-রে মেশিন বিকল। একই সময় ধরে বাক্সবন্দি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি। তা ছাড়া দুই বছর ধরে হাসপাতালের ইসিজি মেশিনটিও নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। অথচ গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জনকে এক্স-রে, ২৫ থেকে ৩০ জনকে আলট্রাসনোগ্রাম এবং ২০ থেকে ৩০ জনকে ইসিজি পরীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে। মেশিন অকেজো থাকায় রোগীদের বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে আরো অনেক উপজেলায়। গত জুলাই মাসে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ বছর ধরে নষ্ট হয়ে আছে এক্স-রে মেশিন। নেই এক্স-রে টেকনোলজিস্টও। সনোলজিস্ট না থাকায় অকেজো পড়ে আছে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন। গত জুলাইয়ে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক যুগেরও অধিক সময় ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে এক্স-রে মেশিন। নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ডেন্টাল চেয়ার। মাঝেমধ্যেই নষ্ট হয়ে পড়ে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সটিও।

হাসপাতালগুলোতে মানসম্মত চিকিৎসাসেবার উপযোগী সুযোগ-সুবিধার অনেক ঘাটতি রয়েছে। ওষুধ নেই, বেশির ভাগ হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স নেই। এক্স-রে মেশিন কিংবা অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই। বিত্তবানরা বড় বড় বেসরকারি ক্লিনিকে বা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক হাসপাতালে সাধারণ প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার কাজটিও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয় না। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণি। সরকারি চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতার কারণে তারা বাধ্য হচ্ছে ক্লিনিকের নামে পরিচালিত এসব অনৈতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যেতে। আবার দালালের খপ্পরে পড়েও যেতে হচ্ছে অনেককে। সেখানে তারা উপযুক্ত চিকিৎসা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবেও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ামরা আশা করি, স্বাস্থ্যব্যবস্থার এই অসংগতিগুলো দূর করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো বেশি উদ্যোগী হবে। নিশ্চিত করা হবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা।