
সংসদ
নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে জানান, খুব
দ্রæত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাতে খুলে দেওয়া যায় সে জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের
নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর
শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থী সবার মধ্যেই এক ধরনের স্বস্তি আসে। প্রকাশিত
খবরে বলা হয়েছে, শুরুতেই সব শিক্ষার্থী স্কুলে আসবে না। কবে কোন শ্রেণির
শিক্ষার্থী স্কুলে আসবে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করবে
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা
অধিদপ্তর এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জাতীয়
দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, শুরুতে এ বছর ও আগামী বছরের এসএসসি ও
এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস নেওয়া হবে। নবম ও একাদশ
শ্রেণির ক্লাস হবে সপ্তাহে দুই দিন। অন্যান্য শ্রেণিতে সপ্তাহে এক দিন
ক্লাস নেওয়া হবে। যদি পরিস্থিতি ভালো হয়, তাহলে স্কুল খোলার দু-তিন সপ্তাহ
পর থেকে সব শ্রেণিতে স্বাভাবিক ক্লাস নেওয়া হতে পারে। প্রাথমিকেও পঞ্চম
শ্রেণিকে বেশিদিন স্কুলে আনা হবে। অন্যান্য শ্রেণিতে এক-দুই দিন ক্লাস হতে
পারে। আর প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাসও অবস্থা বিবেচনা করে শুরু করা হবে।
দেশে
করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে এমন কথা
বলা যাবে না। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করছে।
অফিস, কলকারখানা, বাজার, শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। শুধু
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। গত বছরের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
করে দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না
হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। গত বছর
এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির
ফলাফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চশিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের
ক্লাসে তুলে দেওয়া হয়। ২০২০ সালে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে
ভর্তি হলেও মহামারির মধ্যে গত বছরের মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে
যাওয়ায় তারা ক্লাস করার সুযোগ পায়নি। ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা
এখনো নেওয়া যায়নি। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে নভেম্বরে
এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে শিক্ষা
মন্ত্রণালয়।
কভিড প্রতিরোধ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠকেও
স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জানিয়েছেন, স্কুল শিক্ষার্থীদেরও কভিড টিকার আওতায় আনার চিন্তা করছে সরকার।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার বিষয়টি
নিশ্চিত করতে হবে।