
বর্তমান
সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিচ্ছে।
শহরের সীমা ছাড়িয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির মোবাইল, ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেওয়া
হয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। তথ্য-প্রযুক্তির নানা সুফল সহজলভ্য হচ্ছে।
আবার তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর
অপরাধও বাড়ছে। নিরীহ মানুষ এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে।
কালের
কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ৬৭টি ওয়েব পেজসর্বস্ব কম্পানি
পণ্য কেনাবেচায় বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় অফার ও মুনাফার আশ্বাস দিয়ে কৌশলে
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাত হাজার ২৫৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার
করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে টাকা দিয়ে তিন ভাগের দুই ভাগ গ্রাহকই পণ্য পায়নি,
প্রতারিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিকরা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে
বা অন্যের নাম ব্যবহার করে এ কাজ করেছেন। তাঁরা ২০১৯ সাল থেকে ওয়েব
পেজগুলোর মাধ্যমে গ্রাহক সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই অপকর্ম
চালিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো নিবন্ধন নেই, সরকারি কোষাগারে এক টাকাও
ভ্যাট-ট্যাক্স দেয়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা
সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ তদন্তে
নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানের অপকর্ম ধরা পড়েছে।
প্রতারণার ফাঁদ পাতা
হয়েছে শিক্ষা খাতেও। করোনাকালে বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক
কার্যক্রম চলে অনলাইনে। শিক্ষার্থীরাও ধীরে ধীরে এই ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে
উঠছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শুরু হয়েছে অনলাইন বাণিজ্য। অনলাইনে
নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের
সঙ্গে যোগাযোগ না করেই টাকার বিনিময়ে তারা বিক্রি করছে ভুয়া ডিগ্রি।
তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষরাই এসব সুযোগ বেশি নিচ্ছেন। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত
খবরে বলা হয়েছে, শত শত ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় আছে অনলাইনে, যারা স্বল্প মূল্যে
ভুয়া সার্টিফিকেট বা ডিগ্রি বিক্রি করে। এমডি, পিএইচডি, এমবিবিএস, এমফিল,
মাস্টার্স, অনার্সসহ যে ধরনের ডিগ্রিই চাওয়া হয়, তা তারা পৌঁছে দেয়
ক্রেতার দোরগোড়ায়।
শিক্ষা ও বিপণন খাতের এসব প্রতারকচক্রকে রুখতে
এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে ই-কমার্সে নজরদারি এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
সর্বসাধারণকেও অনলাইন প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে হবে।