
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের পরিবারকে তিন কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১৮ এপ্রিল) মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এই নোটিশ পাঠান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৮ জনকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে তিন কোটি টাকা ও আহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও নিহত এবং আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন লিগ্যাল নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না গ্রহণ করলে এর প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত বেশ কয়েকজনকে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)। সংঘর্ষে আবদুল কাদের, ইয়াসির আহমেদ, আসাদুজ্জামান নামে তিন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছেন।
কনস্টেবল আবদুল কাদের বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী ও শ্রমিকসহ ১০ হাজারের মতো মানুষ আমাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।’
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রথমে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে উসকানি দিয়ে আশপাশের গ্রামবাসীকে এতে সম্পৃক্ত করা হয়।
ঘটনার পর চমেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, চমেক হাসপাতালে এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- শাকিল (১৯), আমিনুল ইসলাম (২৫), দিদার (২১), বিল্লাল (২৬), আযাদ (১৮), মিজান (১৮), কামরুল ইসলাম (২৬), শিমুল (২৮), শহিদুল ইসলাম (২৩) ও হাবিবুল্লাহ (২০)।
আহত শহিদুল ও শাকিল নামে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দু’জন শ্রমিক বলেন, সকালে আমরা বেতন বাড়ানোর জন্য এবং নামাজ ও ইফতারের সময়ে বিরতি দেয়ার দাবি জানাই। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজন ও কারখানার চীনা শ্রমিকরা মিলে হামলা করে। পরে পুলিশ এসে যোগ দেয় এতে।