ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চলে গেলেন ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন
Published : Wednesday, 31 March, 2021 at 8:57 PM
চলে গেলেন ভাষাসৈনিক আবুল হোসেনবায়ান্নর ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (৩১ মার্চ) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। রাজশাহী নগরীর মঠপুকুর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি।

রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অচেতন অবস্থায় ভাষাসৈনিক আবুল হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। মৃত ঘোষণার পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ নিয়ে গেছেন স্বজনরা।

রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ‘ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন নগরীর বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন আবুল হোসেন।’

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তার বুকেও ব্যথা ছিল। এছাড়া বার্ধক্যজনিত অন্যান্য সমস্যাও ছিল। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল। অসুস্থ হওয়ার পর তার করোনার পরীক্ষা করা হয়নি।

ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন বায়ান্নর মহান ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বায়ান্ন পরবর্তী প্রগতিশীল সব আন্দোলন-সংগ্রামে তার সম্পৃক্ততা ছিল। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও কিছুদিন আগে তিনি রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। গত ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানেও আবুল হোসেন উপস্থিত হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের রাজশাহীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল ভাষাসৈনিক আবুল হোসেনের বাসায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার দিয়ে আসেন।

ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন মৃত্যুকালে দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আগেই মারা গেছেন।

আবুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তারা আবুল হোসেনের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে মেয়র লিটন বলেন, ‘বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের সৈনিক আবুল হোসেনের যে অবদান তা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’