
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে
দেশের সব নাগরিককে নতুন করে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা। জাতির সামনে একটাই ল্য স্থির করে দিয়েছেন, আগামীর বাংলাদেশকে নতুন
উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। সব ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে
বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা
হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, সব নেতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী অসার প্রমাণিত করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের
বুকে গর্বিত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দারিদ্র্য জয় করে
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তাঁর ভাষণে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আর্থ-সামাজিক েেত্র
কয়েকটি সূচকের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। আসলেই বিস্ময়কর উত্তরণ ঘটেছে
বাংলাদেশের। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। বর্তমানে
তা দুই হাজার ৬৪ ডলার হয়েছে। ওই সময়ে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ।
বর্তমানে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২০.৫ শতাংশে। জিডিপির আকার চার লাখ
৮২ হাজার ৩৩৭ কোটি থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার
রিজার্ভের পরিমাণ ছিল মাত্র ০.৭৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ এক বিলিয়ন
ডলারের কম; যা বর্তমানে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। ২০০৫-০৬
অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে আমাদের
বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। মানুষের গড় আয়ু ২০০৫-০৬ বছরের
৫৯ বছর থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৭২.৬ বছর। শিশু মৃত্যুহার
কমে প্রতি হাজারে ৮৪ থেকে ২৮ এবং মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ৩৭০ থেকে ১৬৫
জনে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৭৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। দানাদার শস্যের উৎপাদন
২০০৫-০৬ অর্থবছরে এক কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে চার
কোটি ৫৩ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সমতা চার
হাজার ৯০০ মেগাওয়াট থেকে ২৪ হাজার ৪২১ মেগাওয়াটে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ
সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
জাতির পিতার
জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের এক বড় প্রাপ্তি
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত
সুপারিশ পাওয়া। নিউ ইয়র্কে সিডিপির পাঁচ দিনব্যাপী ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা
সভা শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এই সুখবর আসে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলে আয়োজিত
অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘এখন
শুধু আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। পেছনে ফিরে তাকানোর কোনো সুযোগ
নেই।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন
শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, ুধা-দারিদ্র্য-নিররতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ
হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জাতিকে নতুন করে
শপথ নিতে হবে।