
নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে এক গৃহবধুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধুর নাম তৃষ্ণা রানী। সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া গ্রামের ফার্নিচার মিস্ত্রি মিঠু সাহার একমাত্র কন্যা। এ ঘটনায় গত সোমবার ফেব্রুয়ারী নিহতের পিতা মিঠু সাহা বাদী হয়ে সোনাইমুড়ি থানায় গৃহবধুর স্বামী সমর দাশ (২৫), শশুর নিত্যানন্দ দাশ (৬৫), শাশুড়ী গায়েত্রী রানি দাশ (৫৮), ভাসুর বিশ্বজিত দাশ (৩০), ননদ পূজা দাশ (৩৫), লক্ষী রানী দাশ (২০) সহ অজ্ঞাত ২/৩জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৪, উল্লেখিত ধারা ৩০২/৩৪। মামলা সূত্রে জানা যায়, সোনাইমুড়ি থানার নাওতলা মালিবাড়ি নিবাসী নিত্যানন্দ দাশের ছেলে সমর দাশের সাথে গত ৮ মাস পূর্বে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের নাথেরপেটুয়া গ্রামের ফার্নিচার মিস্ত্রি মিঠু সাহার একমাত্র কন্যা তৃষ্ণা রানীর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই নেমে আসে যৌতুকের কালো থাবা। বেশ কয়েকবার যৌতুকের জন্য নিহত তৃষ্ণা রানীকে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনরা মিলে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়। গত ২১ জানুয়ারী ৩ মাসের অন্তঃসত্বা তৃষ্ণা রানিকে লাথি মেরে পেটের সন্তান নষ্ট করে ফেলে। এ ঘটনার পর দরিদ্র পিতা মিঠু সাহা মেয়ের সুখের জন্য সাধ্য অনুযায়ী যৌতুক দেন। এ ছাড়া বিয়ের আগে-পরে জামাইয়ের আবদার মিটাতে দরিদ্র পিতাকে হাত পাততে হয়েছিল সমাজের বিত্তবানদের কাছে। এরমধ্যে তৃষ্ণার স্বামী, শশুররা ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করলে তা দিতে অপারগতা জানায় নিহত তৃষ্ণা রানীর বাবা মিঠু সাহা। যৌতুক না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী ও তার শশুরবাড়ির লোকজন মিলে গত ২১ ফেব্রুয়ারী বিকেলে পাশবিক, বর্বরভাবে নির্যাতন চালিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে তৃষ্ণা রানীকে। পুলিশ তৎক্ষনাৎ অভিযান চালিয়ে নিহত গৃহবধুর স্বামীসহ ৫ জনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানায় নিহত তৃষ্ণা রানীর পরিবার।