
আজ
শেষ হয়েছে ২৪তম তির এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়শিপ। কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত
ইভেন্টে হিমু বাছাড় ও বন্যা আক্তার রৌপ্য আর কম্পাউন্ড নারী এককে ব্রোঞ্জ
জিতেছেন কুলসুম আক্তার মনি। এই তিন আরচ্যারকে ১০ লাখ করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা
দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ এশিয়ান আরচ্যারির সমাপনী দিনে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ ভূইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে পদকজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করেন।
পুরস্কার
প্রদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'অলিম্পিকে গোল্ড মেডেল পেতে হলে
যাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের মত ফ্যাসালিটিজ থাকতে হয়।
সেক্ষেত্রে আমাদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যে সক্ষমতা আছে সেভাবেই আমরা
তাদেরকে সহযোগিতা করব। এটা সত্যি বিশ্বের বহুল জনসংখ্যার দেশের মধ্যে একটি
হলেও অলিম্পিকে গোল্ড নেই আমাদের। তবে আমি আশা করি এই আরচ্যারির মাধ্যমে
আমরা গোল্ড পাব। আর এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি ঘোষণাও দিতে চাই যে, এই
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পক্ষে যে তিন জন মেডেল পেয়েছেন তাদের আমরা যুব ও
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্র্যত্যেককে দশ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার
ঘোষণা করছি।'
গতকাল কম্পাউন্ড ইভেন্টের আরচ্যাররা পদক গ্রহণ করেছিলেন।
আজ তাদের খেলা না থাকায় স্টেডিয়ামে ছিলেন না। উপদেষ্টা যখন পুরস্কারের
ঘোষণা দেন তখন টিম হোটেলে আরচ্যাররা। সেখান থেকেই এমন সুসংবাদ পেয়ে
উচ্ছ্বসিত বন্যা আক্তার। তিনি বলেন, 'এমন ঘোষণার চেয়ে খুশির খবর আর কিছু
নেই। এতে আরচ্যারিতে আমাদের আগ্রহ আরও বাড়বে। আমরা আরও বেশি মনোযোগি হতে
পারব এই খেলায়। শুধু তাই নয় অনেকেই হয়তো আরচ্যারি ছেড়ে বিদেশে চলে যান,
সেক্ষেত্রে এসব সম্ভাবনাও কমে আসবে। সব মিলিয়ে আমি খুবই খুশি এমন একটা
আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণার কথা শুনে।'
ওয়ার্ল্ড আরচ্যারি এশিয়ার সভাপতি
হয়েছেন বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারশেনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কাজী
রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল। ঢাকায় গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ার্ল্ড
আরচ্যারি এশিয়ার কংগ্রেস। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার থমাস হানকে ২৯-৯ ভোটে হারিয়ে
প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড আরচ্যারি এশিয়ার কংগ্রেস নির্বাচিত হয়েছেন। চপলকে
অভিনন্দন জানিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ বলেন, 'বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের
সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রথম বারের মত ওয়ার্ল্ড আরচ্যারি এশিয়ান সভাপতি
নির্বাচিত হয়েছেন। আমি তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই এবং আমি বিশ্বাস করি এর
মাধ্যমে বাংলাদেশের স্পোর্টস সেক্টরের লিডারশিপ বিশ্বের স্পোর্টসকে লিড
দেবে এবং বাংলাদেশের জন্য গর্ব ও সম্মান বয়ে আনবে।'
এবার ব্যক্তিগত ও
দলীয় মিলিয়ে সেরা হয়েছে ভারত। ৬টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও ১টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে
১০টি পদক জিতেছে তারা। দক্ষিণ কোরিয়া পেয়েছে ২টি স্বর্ণ, ৪টি করে রৌপ্য ও
ব্রোঞ্জ। প্রতিযোগিতার আয়োজক বাংলাদেশ একটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক
পেয়েছে।
এশিয়ান আরচ্যারী ফেডারেশনের সভাপতি ও তীর এশিয়ান আরচ্যারী
চ্যাম্পিয়নশিপের লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান কাজী রাজীব উদ্দীন
আহমেদ চপল বলেন, 'অবশ্যই আমাদের খেলোয়াড়েরা যদি ভালো পারফরম না করতে পারে,
আয়োজক হিসেবে, এশিয়ান আরচ্যারীর সভাপতি হিসেবে আমি যতই ভালো করি না কেন,
বাংলাদেশের সুনাম হবে না। এশিয়ান আরচ্যারীর সভাপতি পদে আমার বিজয় এবং
আমাদের ছেলে মেয়েদের পদক অর্জন-সব মিলিয়ে আমরা সবাই উচ্ছ্বসিত। যদিও
ব্রোঞ্জ পদক-এটা কুলসুমের জন্য বিশাল পাওয়া। একটা নতুন মেয়ে, প্রথম
আন্তর্জাতিক ইভেন্টে, এত বড় আসরে প্রথম খেলতে নেমেছিল, পদক পেল, আমার মতে
সে খুব ভালো ফল করেছে এবং তাকে সাধুবাদ দেওয়া উচিত।'
ফেডারেশনের
সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ বলেন, 'আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে। অনেক দিনের
কষ্ট, পরিশ্রম, ত্যাগ ও পরিশ্রমের পর আমাদের আয়োজন শেষ হয়েছে সফলভাবে।
সিটি গ্রুপ এবং সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আমাদের পাশে ছিল, এজন্য তাদের
প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সফলভাবে এই আয়োজন
সম্পন্ন করতে পেরেছি। নানা বাধা প্রতিকূলতার মধ্যে দুই ভেন্যুতে খেলতে
হয়েছে, তারপরও এটা আমরা সফলভাবে আয়োজন করতে পেরেছি, এটা আনন্দের ব্যাপার।'