প্রায়
ছয় বছর পর কুয়েত থেকে বাড়ি ফিরেছেন প্রবাসী নাজমুল হাসান। সেখানে কেবল
অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ধারদেনা শোধ করে কিছুটা স্বচ্ছলতার মুখ
দেখতে শুরু করেছিলেন নাজমুল। অবশেষে পরিবারের ইচ্ছায় দেশে ফিরে দেড়মাস আগে
বিয়েও করেন। নতুন জীবনের শুরু, প্রবাসে ফেরার প্রস্তুতিও প্রায় শেষ কিন্তু
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার আর প্রবাসে ফেরা হলো না।
রোববার (২
নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের
দেবিদ্বারের জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বেগমাবাদ এলাকায় একটি লরির চাপায় প্রাণ
হারায় নাজমুল হাসান (২৫)। নাজমুল হাসান দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ
গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুমিল্লার
ক্যান্টমেন্ট থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন নাজমুল। বেগমাবাদ-চরবাকর
মোড়ে একটি লরিকে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরির নিচে পড়ে
ঘটনাস্থলেই মারা যায় নাজমুল। নাজমুলের মামাতো ভাই মো. ফারুক জানায়, “মাত্র
চার মাস আগে কুয়েত থেকে দেশে এসেছিল নাজমুল। পরে দেড় মাস আগে বিয়ে করেছে।
কয়েকদিন পরই আবার কুয়েত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আর যাওয়া হলো না।
নাজমুলের
পরিবারের সদস্যরা জানান, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কিছু কাপড়চোপড়
কিনতে গিয়েছিলেন নাজমুল। ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে। পরিবারের তিন ভাইবোনের
মধ্যে নাজমুল সবার বড়। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামজুড়ে। মা
মিনুয়ারা বেগম বারবার বেহুশ হয়ে ছেলেকে খুঁজছেন, নির্বাক তাকিয়ে আছেন
নাজমুলের নববধূ।
নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ছেলেকে বিয়ে করিয়ে খুব
আনন্দে ছিলাম। সে আনন্দটা রাখল না আমার ছেলে। তার নববধূর হাতে মেহেদির রং
না মুছতেই মারা গেল আমার ছেলে।
মিরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ
আক্তারুজ্জামান বলেন, “দুর্ঘটনায় জড়িত ঘাতক লরিটি জব্দ করা হয়েছে। তবে
চালককে গ্রেপ্তার করা যায়নি। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ
ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
