কুমিল্লার
দেবিদ্বারে এক প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে এডিট করা অশ্লীল ছবি
পর্ণোগ্রাফি সাইটে দেয়ার হুমকি দিয়ে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি
প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় ওই নারী রবিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দেবিদ্বার থানায়
একটি সাধারণ ডায়রি করেন। প্রতারণার শিকার নারীর নাম সোহেলী আক্তার। তিনি
দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের এলাহাবাদ গ্রামের প্রবাসী সাকিবুল
ইসলামের স্ত্রী। গত ১৫ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।
জিডি
সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ নভেম্বর ওই গৃহবধুর ব্যক্তিগত ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ
নম্বরে অপরিচিত একটি নম্বর (০১৮৬৮-৮১৯৭২৭) থেকে বার্তা পাঠানো হয়। ওই
বার্তায় তানিয়া নামে এক নারী থেকে তার নম্বর সংগ্রহ করেছেন বলে জানায়। পরে
অপর একটি বার্তায় ওই ব্যক্তি বলেন, ওই গৃহবধু নাকি একটা (অশ্লীল) সাইটে ছবি
পাঠিয়ে চাকরীর করার জন্য আবেদন করেছেন। পরবর্ততে ওই নারী এমন কোন সাইটে
চাকরির আবেদন করেন নাই জানালে ফোনের ওই প্রান্ত থেকে প্রতারক চক্র ওই নারীর
গলার সঙ্গে অপর আরেকটি অশ্লীল ছবি এডিট করে তার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়।
পরবর্তীতে এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতিদেখিয়ে
ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন।
প্রতারণার শিকার ওই নারী বলেন, আমি যদি ওই
অশ্লীল ওই সাইটে কাজ না করি তাহলে আমার এডিট করা খারাপ ছবি বিভিন্নভবে
ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এরপর আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। এর এক পর্যায় আমাকে
ওই ব্যক্তি বলতে থাকেন ছবিটি কেটে ফেলবেন যদি আমি তাদের কিছু টাকা দেই পরে
আমি ওদের দেয়া বিকাশ নম্বরে ৪ হাজার টাকা পাঠাই। টাকা পাওয়ার পর তারা
আরেকটি ছবি দিয়ে বলছে এত কম টাকায় হবে না, পরে আমি আরও ৬ হাজার টাকা দেই।
এর একদিন পর আমি ওই নম্বরটি ব্লক করে দেই। এরপর ওই চক্রটি আমাকে অন্য
আরেকটি নম্বর থেকে কল করেন। পরে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও অর্থ দেওয়ার জন্য
চাপ দেন। পরে সংসার বাঁচাতে দিশা না পেয়ে আমার শ্বাশুড়ির ঘরে রাখা স্বর্ণ
বিক্রি করে ৭ লাখ টাকা তাদের দেয়া কয়েকটি বিকাশ, নগদ ও রকেট নম্বরে পাঠাই।
এরপর তারা আরও ১ লাখ ৪১ হাজার টাকা দিতে চাপ দিতে থাকেন।
মাইনুল হোসেন
নামে ওই নারীর চাচা জানায়, প্রথমে আমরা এ ঘটনা জানতে পারিনি। পরবর্তীতে
সোহেলি যখন প্রতিবেশীদের কাছ থেকে টাকা ধার করার জন্য ঘুরতেছে তখন আমরা
বিষয়টি টের পাই। পরে ওকে চাপ দিলে এ ঘটনা খুলে বলে। এটি একটি প্রতারক চক্র,
তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দেবিদ্বার থানা একটি জিডি
করেছি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছামছুদ্দিন মোহাম্মদ
ইলিয়াছ বলেন, প্রতারণার শিকার ওই নারী দেবিদ্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়োরী
করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
