
বাংলাদেশের ব্যাটারদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং দেখে সবাই হতাশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে চট্টগ্রামে যে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হয়ে গেল, তার একটিতেও ব্যাটিংয়ে কোনো পরিকল্পনার ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে যার মতো খেলেছেন। কারও ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি, সামনে কোনো টার্গেট আছে বা তারা কোনো লক্ষ্য পূরণের জন্য খেলছেন। তবে কি কোনোই গেম প্ল্যান ছিল না?
তার উত্তর দিতে গিয়ে হাবিবুল বাশার মানতে চাননি যে, কোনো টিম প্ল্যান ছিল না। তবে তার জোর তাগিদ, প্রতিটি ক্রিকেটার ও ব্যাটারের একটি নিজস্ব পরিকল্পনা থাকা উচিত।
বাশারের কথা, ‘আসলে টিম প্ল্যান, গেম প্ল্যান অবশ্যই ছিল। সেটা সবসময়ই থাকে। তবে তার পাশাপাশি আরও একটা প্ল্যান থাকা খুব দরকার।’
কী সেই প্ল্যান? বিসিবির বর্তমান হেড অব গেম ডেভেলপমেন্টের মতে, প্রতিটি খেলার আগে নিজের ব্যাটিং প্ল্যান তৈরি করা খুব দরকার। আমার নিজের ব্যাটিং কী হবে, তা ঠিক করা অতি জরুরি।
বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ভেঙে বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশের সব দলেরই টিম প্ল্যান থাকে। পাশাপাশি সব ব্যাটারের নিজস্ব ব্যাটিং প্ল্যান থাকে, সেটা থাকতে হবে। আমি পরের ম্যাচ কার সঙ্গে খেলব, সেই দলে কতজন বোলার, তারা কেমন সেটা নিজে থেকেই জানতে হবে। কাকে কিভাবে খেলব, কাকে কোন জায়গা দিয়ে রান করব, কার বিপক্ষে কোন ঢঙে, গতিতে ব্যাট করতে হবে, তা আসলে নিজেকেই ঠিক করতে হবে। এটা কোচ বাতলে দেবেন না।’
‘উদাহরণ দিতে পারি। কেন উইলিয়ামসন একটা বোলারের বলে এক ম্যাচে খুব স্ট্রাগল করেছিলেন। ঠিক সেই সিরিজের ম্যাচের আগে নেট প্র্যাকটিসে ঐ বোলারের বোলিং মোকাবিলার এক অভিনব প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সাবেক কিউই ক্যাপ্টেন। প্রতিপক্ষের বোলারের মতো অ্যাকশন ও ওই ধরনের বোলিং মোকাবিলা করার জন্য একই ধাঁচের একজন নেট বোলারকে খুঁজে এনে নেটে প্র্যাকটিস করেছিলেন উইলিয়ামসন। ওই বোলারকে কোথা দিয়ে রান করতে পারব, তা নিয়ে ভেবে ভেবেই বোলারকে নেটে এনে তার বলে ভালো খেলার ও রান করার অভ্যাস তৈরির চেষ্টা করেছিলেন।’
বাশারের পরামর্শ হলো, ‘আমাদের ব্যাটারদেরও ঠিক সেইভাবে চিন্তা করে নেটে ও অবসরে বিভিন্ন বোলারকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আমি ঠিক পরের ম্যাচে কোন দলের সঙ্গে খেলব, তাদের কোন বোলার কেমন; তা ভেবে ভেবেই নিজেকে তৈরি করতে হবে। সেই সব বোলারের অবিকল বোলার তো আর নেটে পাওয়া যাবে না। তাই নিজের প্ল্যান করে নিজেকেই তার বাস্তব রূপ দিতে হবে।’
শুধু বোলার নয়, মাঠ কেমন, কন্ডিশন কেমন; সেসবই মাথায় নেওয়া উচিত ব্যাটারদের। বাশারের কথা, ‘কোন মাঠের ডায়ামিটার কেমন। কোন মাঠে কোন দিক থেকে বাতাস বেশি আসে, কোন দিক থেকে কম আসে। মাঠের আকার ও উইকেটের গতি-প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যাটিং শৈলী ও অ্যাপ্রোচ ঠিক করতে হবে। এটাই ইম্পর্ট্যান্ট।’
