এক্সিম
ব্যাংকের কুমিল্লার গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছেন না।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) কুমিল্লা মনোহরপুর শাখায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকে
টাকা তুলতে আসা গ্রাহকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গ্রাহকরা
অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটি তাদের আমানতের টাকা ফেরত দিচ্ছে না।
কিছুদিন সামান্য পরিমাণে টাকা দিলেও বুধবার (২৯ অক্টোবর) থেকে সম্পূর্ণভাবে
উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন শত শত গ্রাহক।
দুশ্চিন্তা আর অনিদ্রায় কাটছে তাদের রাত।
বুড়িচং উপজেলা থেকে আসা এক
মধ্যবয়সী নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, স্যার, কয়টা টাকা দেন না। সারাজীবনের
সঞ্চয় জমা রাখলাম এই ব্যাংকে, এখন কি কিছুই পাব না? মুরগি-ডিম বিক্রি করে
টাকা জমা দিছি এই ব্যাংকে।
একই অভিযোগ করেন বরুড়ার মুদাফরগঞ্জের
মাইনুদ্দিন পাটোয়ারী সোহাগ। তিনি জানান, এই ব্যাংকে আমার অ্যাকাউন্টে দুই
লাখ টাকার মতো আছে। কিন্তু আজ পাঁচ হাজার টাকাও দিতে পারছে না ব্যাংক। অথচ
প্রতিদিন কিস্তির টাকা ও জমা নিচ্ছে ঠিকই। এখন বলছে, টাকা দিতে পারবে না।
আমরা কোথায় যাব?
এ বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপক আবুল খায়ের জানান, বাংলাদেশ
ব্যাংক ফান্ড সাপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত গ্রাহকদের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
ব্যাংক বর্তমানে ফান্ড সাপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে। তবে গ্রাহকদের টাকার
অবস্থান সম্পর্কে তিনি কোনো নির্দিষ্ট জবাব দিতে পারেননি।
ব্যাংকের
আরেক কর্মকর্তা মেহেদী বলেন, মার্কেট থেকে রিকভারি বা জমা আসলে কিছু টাকা
দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় সম্ভব নয়। ব্যাংকের দায়িত্বে প্রশাসক বসানো হলে
গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে। আরেক কর্মকর্তা জানান, সরকার
বর্তমানে পাঁচটি ব্যাংক একত্রিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং
উপদেষ্টামণ্ডলীর অনুমোদনও মিলেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নতুন কাঠামোতে
কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে তিনি জানান। এদিকে, গ্রাহকরা তাদের কষ্টার্জিত
অর্থ ফেরত পাবেন কিনা সে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন কুমিল্লার এক্সিম ব্যাংকের
হাজারো আমানতকারী।
