রাজধানীর
মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকার ঠিক পাশে আড়াই কাঠার শিল্প প্লটে রাসায়নিকের
গুদামটির অবস্থান। এর সামনেই পোশাক কারখানা। আশপাশে আরও রয়েছে বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রসহ আরও বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগার পর চারদিকে বিষাক্ত ধোঁয়া
ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্রæত আক্রান্ত হন ঠিক পাশের চারতলা পোশাক কারখানার
ভবনটির কর্মীরা।
কারখানা দুটির আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কাজের সময় পাওয়া
তথ্যের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, পাশের কারখানার আগুন
দ্রæত সরু গলির ওপারের পোশাক কারখানার ভবনের নিচে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে পোশাক
কারখানার কর্মীরা নিচে নামতে পারেননি। আবার ছাদের দরজায় তালা থাকায় ধোঁয়া
থেকে বাঁচতে ওপরেও যেতে পারেননি।
উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এ
কারণে কর্মস্থলেই বিষাক্ত ধোঁয়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন পোশাক কারখানাটির ওপর
তলায় থাকা কর্মীরা। পরে সেই ভবনের ওপরের দিকে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়লে পুড়ে
অঙ্গার হতে হয় তাদের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬টি লাশ উদ্ধারের তথ্য
দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সবগুলো লাশ উদ্ধার হয়েছে পোশাক কারখানা ভবনের
দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে
পোশাক কারখানায় তল্লাশি অভিযান শেষের তথ্য দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক
(অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
চৌধুরী প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে বলেন, “চারতলা পোশাক কারখানার উপরে ছাদ
টিনের। ছাদে যাওয়ার জন্য সেখানে একটি গ্রিলের দরজা রয়েছে। সেটি তালা মারা
ছিল। এ কারণে তারা উপরের দিকে যেতে পারেননি।
“আপনারা জানেন যে পরিমাণ
কেমিকেল বিস্ফোরণ, সেটার ফ্ল্যাশওভারে টক্সিক গ্যাসের কারণে আকস্মিকভাবে
ওনারা অজ্ঞান হয়েছেন। পরে তারা সরতে পারেননি। উপরে যেতে পারেননি, নিচেও
যেতে পারেননি।”
রাসায়নিক গুদামের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসার তথ্য
দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, সেখানেও মৃতদেহ থাকতে
পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তারা।
তিনি বলেন, পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামের কোনটিরই অনুমোদন ছিল না। কোনো ধরনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা ছিল না।
আগুন লাগা এই পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদাম কোনটারই অনুমোদন ছিল না বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
তৈরি
পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, “মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে যে
কারখানায় আগুন লেগেছে, তা বিজিএমইএ এর সদস্যভুক্ত কোনো পোশাক শিল্প
প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি ওয়াশিং কারখানা।”
এটির নাম শাহ আলী ওয়াশিং লিমিটেড বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য দিয়েছে সংগঠনটি।
