মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর ২০২৫
২৭ কার্তিক ১৪৩২
রবিবাসরীয়...
প্রকাশ: রোববার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৩৭ এএম আপডেট: ১২.১০.২০২৫ ১:২৮ এএম |

 রবিবাসরীয়...








একজন শিক্ষকলেখকের দায়




রবিবাসরীয়...আনোয়ারুল হক ।।







প্রিয় সুধিজন
   আজকের এই মঙ্গল-সন্ধ্যা আমার জন্য অনন্য সময়। মুহুর্ত। 
   ‘বিনয় সাহিত্য সংসদ’র নেপথ্য পরিচালকদের আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। কোন সন্দেহ নেই, আমি আনন্দিত হয়েছি। কিন্তু সাথে সাথে শংকিত হয়েছি এই ভেবে যে, হাজার বছর আগে থেকে মানুষের হৃদয়ের কাছে দার্শনিক, নাট্যকার, কবি ও লেখকরা মানুষের প্রতি তাঁদের অন্তর তাগিদ থেকে অলিখিত দায় বহন করে থাকেন। তাঁরা সত্যের কাছে, কল্যাণের কাছে অটল থাকার নীতি যেকোন ম‚ল্যে মেনে চলেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে, বাকস্বাধীনতার পক্ষ নিয়ে মুক্তির কথা বলার এই দায় কেউ তাঁদের উপর চাপিয়ে দেয়নি। কেননা, তাঁদের জন্মই হয়ে থাকে সঠিক সময়ে। যেজন্য তাঁরা যুগ, সময় অতিক্রম করে চিরকালের সন্তান হিসেবে বেঁচে থাকেন। 
   আমরা জানি, শোষক রাষ্ট্র, অন্ধ-সমাজের বিরুদ্ধে নির্যাতীত মানুষের পক্ষে কবি, শিল্পী, দার্শনিক, শিক্ষককে সত্য কথা বলার জন্য তাঁদের কাউকে বিষপানে, কাউকে নিষ্ঠুর অত্যাচারের য‚পকাষ্ঠে, মধ্যযুগে গিলোটিনে, আধুনিক সময়ে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে কিংবা গুলিতে জীবন দিতে হয়েছে। তবুও তারা সত্য ও ন্যায়ের বিপক্ষে গিয়ে অন্যায়ের কাছে নিজেকে বিক্রি করে দেননি। সত্য ও মুক্তির কণ্ঠস্বর হওয়াতে অত্যাচারী রাজা, সম্রাট ও শাসকের বিরূপতার শিকার হলেও সত্য অবরুদ্ধ থাকে না। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বা আমরা একটি অলিখিত দায় বহন করছি বলে আমি মনে করি। 

প্রিয়জন 
   আপনারা যখন এই রকম একটি সাহিত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাকে সম্মানিত করছেন তখন আমার দায় সম্পর্কে অনবহিত থাকলে চলে না। বাংলাদেশের জ্ঞান ও মণীষার পাদপীঠ বাংলা একাডেমি এবছর আমাকে নজরুল গবেষণা পুরুষ্কার ২০২৫ দিয়ে সম্মানিত করেছে। তখন থেকে লেখকের দায় বিষয়ে আমি ভাবছি। আমার যোগ্যতার এই অনন্য স্বীকৃতিতে আমি সচকিত হয়েছি। প্রকৃতপক্ষে, শংকিত হয়েছি। তার কারণ আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজে লেখকের দায় উন্নত দেশের চেয়ে বজায় রাখা অনেক কঠিন। রূপক ছাড়া কথা বলা নিজের উপর বিপদ টেনে আনার সামিল। তবুও মানবতাবাদী কণ্ঠস্বর নিশ্চুপ থাকে না। অলস বসে থাকেনা। ফলে লেখকের কাজ তাঁকে চালিয়ে যেতে হবে। রাষ্ট্রের, সমাজের, কিংবা কাছের মানুষের বিরূপ আচরণকে, অনীহা-অপমানকে একজন লেখকের দায় থেকে উপরি পাওনা বলে মনে করাই বাঞ্ছনীয়। আর সবশেষে এটুকু বুঝতে হবে যে, সত্য ও সুন্দরের কাছে একজন শিক্ষক, লেখক কখনো দায়মুক্ত নয়। 

  আমি চিরকালের নিভৃতচারী মানুষ। কর্ম জীবনে সরকারি কলেজে শিক্ষকতায় এবং বর্তমানে লেখা-লেখিতেও। এই কুমিল্লা শহরে আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা-জীবন সব। স্বপ্ন দেখেছি, অধ্যাপনা করবো। তাই করেছি। আমার শিক্ষকতা জীবন তেতাল্লিশ বছরের। পরিপ‚র্ণ আনন্দ এবং তৃপ্তি নিয়ে ২০২৩ সালে শিক্ষকতা জীবনে ইতি টেনেছি। আর এখন পড়া এবং লেখার জীবনে মনোনিবেশ করেছি। 
   ২০১০ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদে অবসর গ্রহণ, তার পরের কর্মজীবন, বর্তমান জীবন সবকিছু নিয়ে আমি তৃপ্ত। এজন্যে নিরন্তর পরম করুণাময়ের চরণে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকি। আমি জানি, আমার চলার পথে প্রয়াত বাবা-মা, অনন্তের শিক্ষক মুর্শিদের দয়ার দৃষ্টি আছে আমার উপর। 

  কবিতা ক‚হকের ডাকে কুমিল্লা জিলা স্কুল পর্ব বাদ দিলে ১৯৭২ সাল, স্বাধীনতার পর থেকে লেখক জীবন শুরু করেছি। এই দশকেই সময় আমাকে দিয়ে মঞ্চ-নাটক লিখিয়েছে, পরিচালনা ও অভিনয় করেছি। গল্প লেখাও তখন থেকে চলছে এবং গবেষণার কাজে নিয়মিত হয়েছি। তবে, কবিতা আমাকে ছেড়ে যায়নি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশসহ চিরকালের কবি অনেকেই আমার প্রিয়। প্রিয় কবি আল মাহমুদ, শাসসুর রাহমান, আবুল হাসান, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। হাল আমলের পিয়াস মজিদসহ আরও অনেকে।

  নজরুল নিয়ে আমার গবেষণা কাজ শুরু করেছি ২০০০ সালে যখন আমি ভিক্টোরিয়া কলেজের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করি। আমার তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ড. সৈকত আসগরের তাগিদে, ভালোবাসার নিগড়ে পড়ে। সেই সাথে ক্লাশে পড়ানো এবং অনুধাবনের কল্যাণে। অনেকটা বাধ্য হয়ে শিক্ষকতা জীবন শেষে হজরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে সাত বছরের অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠাতে নজরুল বিষয়ে পিএইচ ডি সম্পন্ন করেছি। ২০২৩ সালে, তখন আমার বয়স ৭১ বছর। প্রকৃতপক্ষে, এই ডিগ্রি আমার কাছে প্রাতিষ্ঠানিক একটি সার্টিফিকেট মাত্র। লেখক জীবনের পদবী নয়। 
   এখানে আজকের তারুণ্যে কাছে আমি একটি বার্তা দিতে চাই, তা হলো- মানুষের জীবনে ‘একাগ্রতা, ইচ্ছে, এবং মনের জোর, জেদ থাকা আবশ্যক। যোগতাই সব। এটি অর্জন করতে পারলে কেউ কাউকে অবনমন করতে পারে না। জাতীয় সম্মান, আপনাদের প্রদত্ত সম্মান ডিগ্রির চেয়ে বড় আমার কলমের জোর। আপনারা আজ আমাকে যে উপহার দিলেন, সে আমার লেখালেখির জন্য। শিক্ষক জীবনের শেষ ধাপ সরকারি স্বীকৃতি ‘প্রফেসর’ পদ অর্জন সৌভাগ্যের বিষয়। আমার সঙ্গী অনেক বয়োজৈষ্ঠ শিক্ষক তা পাননি। নামের আগে এই পদ নিজে নিজে লাগিয়ে দেওয়া যায় না। এর জন্য ত্যাগ, তিতিক্ষা, কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করা লাগে। লেখক জীবনও তাই। বয়স নয়, কষ্ট, অভিজ্ঞতা, পাঠ এবং নিরন্তর লিখে যাওয়ার ধৈর্য লাগে। স্বীকৃতি আনন্দ দেয় বটে তবে প্রকৃত লেখকের কাছে স্বীকৃতি প্রত্যাশার বিষয় নয়। একটা নির্লজ্ব প্রতিযোগিতার কঠিন সময়ের মধ্যে আমরা বাস করছি। সারা বাংলাদেশের কবি, সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক, শিক্ষক সমাজ সকলেই বহুধা-বিভক্ত। অসুন্দরের চর্চাই হচ্ছে বেশি।   

   আমার অনুধাবন, যখন থেকে শিল্পী কবি, সাহিত্যিক, গবেষক, শিক্ষককে নির্মোহ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বাদ দিয়ে অত্যাচারী রাষ্ট্র ও সমাজ অনুগতদের পৃষ্ঠ চাপড়ানো শুরু করেছে, তোষামোদীর দিকে টানতে শুরু করেছে, তখন থেকেই মুক্ত, সুশীল সমাজের অধঃপতন শুরু হয়েছে। খুব কম ব্যতীত সকলেই মেরুদÐহীন তোষামোদির পাঁকে ডুবে গেছেন। শিল্পের সৌন্দর্য জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের স্বার্থে লাভ ও লোভের আশায় মুখোশ পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রাষ্ট্র ও সমাজে শিক্ষিত বলে কথিতরা তাঁদের জীবন-যাপনে মিথ্যাকে লালন করছেন। একজন কলমজীবী যখন মিথ্যাকে লালন করেন, পোষণ করেন, সত্যের চেয়ে তকমার ম‚ল্য বেশি দেন, তাহলে তিনি লেখকের আসনে থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন বলে আমি মনে করি। বর্তমান সময়ে কোন নীতি-নৈতিকতার আদর্শ ধারণ না করে, নির্লজ্জের মতো মুখ রক্ষার খাতিরে চাটুকারিতাকে প্রশ্রয় দিতে দিতে সমাজের চেহারা আজ এমন হয়েছে যে, রজ্জুকেও এখন সর্প ভ্রম হচ্ছে। রাষ্ট্র ও সমাজের কোষে কোষে পচন ধরে গেছে। সমাজের যে শ্রেণি তারুণ্যকে পথ দেখাবে, তারা নিজেরাই আজ বেপথু।   

   বস্তুত, আমরা তো ইতিহাস-বিমুখ জাতি।
   কারো পক্ষ অবলম্বন না করে দেখুন, বিচার করুন, ইতিহাস কী ইংগিত বহন করে? ব্যক্তিগতভাবে আমার জীবনদর্শন সাম্যের। ভিন্ন রাজনৈতিক মত সকলেরই আছে। কিন্তু, আমি জীবন চলার পথে শুরু থেকে মনে করেছি, একজন কবি, লেখক শিক্ষকের কোন দল নেই। তিনি কোন দলীয় রাজনীতির বাহন কখনো হতে পারেন না।
  আমি এই শহরে, বিশেষ করে, উনসত্তুরের উত্তাল সময় থেকে তরল আগুনে পুড়তে পুড়তে বড় হয়েছি। সব দলেই আমার বন্ধু আছে। বড় ভাই আছে। শিক্ষকতা জীবনে আমার নিরপেক্ষ চরিত্র আমি বজায় রেখেছি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে প্রথম দফায় ১৯৯০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত, দ্বিতীয় দফায় বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে ২০০৮ এর মাঝামাঝি সময় থেকে ২০১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছি। 
   ডিগ্রি সেকশনে ‘নজরুল ছাত্রাবাস’র সহকারি হল-সুপারের দায়িত্ব পালন করেছি প্রায় এগার বছর। ঐ সময়ের ছাত্ররা জানেন, শত বাঁধা-বিপত্তির মধ্যেও আমি শিক্ষকতার আদর্শ কখনো বিসর্জন দিইনি। সব ছাত্রের শিক্ষক ছিলাম আমি। চাকুরি জীবনের শুরুতে ইস্পাহানী স্কুল এÐ কলেজ, সিলেট ক্যাডেট কলেজ তারপর পিএসসি’র মাধ্যমে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, সিলেট সরকারি কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ এইসমস্ত ভ্ন্নি ধর্মী প্রতিষ্ঠনে আমার জীবন অভিজ্ঞতা পোক্ত হয়েছে।
   লেখক জীবনেও স্বাধীন সত্তাকে বজায় রেখেছি। আমাদের জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলামকে গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নেওয়ার ম‚ল কারণ, এই কবির ঋজু ব্যক্তিত্ব। অসাম্প্রদায়িক, নিরপেক্ষ এবং প্রেমিক চরিত্রের জন্য। আমার মুর্শিদ ড. আহমদ পেয়ারা বোগদাদী’র মতো নজরুলও ছিলেন আশেকে রসুল (দ), অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ী দরদী। নজরুলের এই বৈশিষ্ট্যসম‚হ আমার মনের সঙ্গে মিলে যায়। ফলে আমি তাঁর অনুরক্ত।
   বিশ্বাস করুন, নজরুলের মৌল-শিক্ষা থেকে আমি মানুষের ব্যক্তিত্বকে সম্মান করি। লেজুড় বৃত্তিকে ঘৃণা করি। মিথাকে প্রশ্রয় দেই না। ধার্মিক, সাধককে মান্য করি, অনুসরণ করি। বর্তমান দেশ-কাল ক্ষমতার রাজনীতিতে একজন লেখকের জন্য বড় সমস্যা হলো ধোঁকার মধ্যে বসবাস করা। হয়তো বা অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কোন কোন লেখকের, বন্ধুর চেনা মুখ অচেনা হয়ে যায়। যে লেখক প্রলোভনের ফাঁদ থেকে নিজেকে রক্ষা করে বাঁচেন, হতে পারে তাঁর জীবন একাকীত্বের, অবহেলার। অপ্রকৃত বন্ধুদের হীনমন্যতা তাঁকে বেদনা ছাড়া আর কিছু উপহার দেয় না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিই মানুষের হৃদয়ে বেঁচে যান।  

   কুমিল্লাকে আমি ভালোবাসি। এই শহরের ধ‚লো মাটি হাওয়া জল আমার পরম প্রিয়। জীবনের প্রয়োজনে আমাকে ঢাকায় স্থায়ী হতে হয়েছে। কিন্তু আমার মননে, লেখায়, গল্পে কুমিল্লা জেগে আছে। জেগে থাকে। আমার চারটি গল্প গ্রন্থের অধিকাংশ গল্পের পটভ‚মি কুমিল্লা শহরের উপাদানে ছড়িয়ে আছে। ‘৬ ডিসেম্বর ডেটলাইন ১৯৭১’ মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমিল্লা রেলস্টেশনকে ভিত্তি করে লেখা আমার একটি উপন্যাস আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাঞ্জাবি সৈন্যদের ময়নামতি থেকে আখাউরা-কসবা পর্যন্ত অপারেশনের অন্যতম ঘাঁটি ছিল কুমিল্লা রেলস্টেশন এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আরেকটি লেখা (আমোদ, কুমিল্লার কাগজ’এ প্রকাশিত) ‘মুক্তিযুদ্ধে গেছি, মুক্তিযোদ্ধা নই’ স্মৃতিচারণ- এও কুমিল্লাকে কেন্দ্র করে। যে কোন সময়, যেকোন অনুষ্ঠানে ডাকলেই আমি আসি। আমার দাদা-দাদি. বাপ-মায়ের কবর এই মাটিতে। তবুও বছর খানেক আগে একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, মৃত্যুর পর আপনার মাটি কি কুমিল্লায় হবে ? 

   কেউ কি বলতে পারেন, কার মৃত্যু, মাটি কোথায় হবে ? বর্ধমানের চুরুলিয়ার কবি দুখু মিয়া হয়তো জানতেন, তিনি বিখ্যাত কবি হবেন। কিন্তু তিনি কি জানতেন, তাঁর কবরের মাটি স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের নিচে হবে ? আমি কুমিল্লার নই, এটা সাব্যস্ত করার জন্য আপনাদের ম‚ল্যবান সময় দয়া করে আর নষ্ট করবেন না।
   ঢাকায় থাকি বলে জাতীয় দৈনিকে আমি নিয়মিত লেখালেখি করি। ঢাকা কেন্দ্রীক আমার বর্তমান জীবন। নজরুল বিষয়ক আমার একাধিক গ্রন্থ ঢাকা নজরুল ইন্সটিটিউট ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে। বাংলা একাডেমি, নজরুল ইন্সটিটিউট ঘিরে আমার বর্তমান কাজকর্ম। কিন্তু রাতশেষে তো আমি এই কুমিল্লার মাটির সন্তান আর বড় অর্থে বাংলাদেশের। আমার স্বপ্নগুলো জন্ম হয়েছে, তাজা হয়েছে এই মাটির রসে। ভালোলাগা অনুভব আপনাদের মতো পরিচিত মুখগুলো। 

   ‘পদাতিক’র কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় আমার আরেকজন প্রিয় কবি। তাঁর ভাষায় বলি, কে কোথায় জন্মগ্রহণ করেছে, সেটা বড় কথা নয়, কে কোথায় জেগে আছে-সেটাই বড় কথা। আমি আমার গ্রন্থগুলোতে, লেখার মধ্যে বেঁচে থাকবো। একটা ভালো লেখা, ম‚ল্যবান গ্রন্থ লিখে যেতে পারলে সেখানেই আমার তৃপ্তি। কেননা, ‘ইতিহাসের পা’ একদিন না একদিন বেরিয়ে আসবে। সেই পা হেঁটে হেঁটে জনমনে আসবে। জাগিয়ে তুলবে মাটি ও মানুষ। জেগে থাকবে।

আমার নিজের একটি কবিতা দিয়ে নিবেদন শেষ করি
ইতিহাসের পা

একশ বছর পর
হিমালয়ের বরফের চাঁই ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে ইতিহাসের পা 
একজোড়া বুটের একটি, কোম্পানীর ছাপমারা এক পায়ের
একটি মোজা 
আর ঝুরঝুরে কিছু হিমের বাতাস সেদিনের।

কী লিখছো তুমি ? ইতিহাস ? লেখো-
ওরা সবাই নিজের মতো করে লিখেছে, তুমিও 
আমাদের তো মাত্র পঞ্চাশ গেলো
আরও পঞ্চাশ যাক ।
আমি নিশ্চিত তখন পাথরের স্বপ্ন ফুঁড়ে 
ফুটবে রক্ত করবী।

সেদিন তুমিও থাকবে না, আমিও থাকবো না
কেবল ওরা জানবে- 
মিথ্যাবাদী রাখালের গল্প থেকে কিছুই শেখনি
ক্ষমতার রাজনীতি
সত্য বলতে বলছে, নিজে কখনো বলোনি !

১২. ১০. ২০২৫
(লেখাটি কুমিল্লার ‘বিনয় সাহিত্য সংসদ’ প্রদত্ত পদক প্রদান অনুষ্ঠানে পঠিত)












http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
চান্দিনার জোয়াগে বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ড
মেজর এম এ গণির ৬৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু, ৯০ দিনের মধ্যে ভোট
বিএনপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিরোধ সামলাতে নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের যাচাই
দাউদকান্দিতে নিখোঁজের তিনদিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
লাকসামে দোলার প্রচারণায় হামলা
সেই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু
কুমিল্লায় স্বস্তি ফিরছে সবজির দামে
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু, ৯০ দিনের মধ্যে ভোট
কুমিল্লা মেডিকেল ও ঢাকার বাসায় গিয়েও আহত দোলার দেখা পাননি আবুল কালাম
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২