কুমিল্লার হোমনায় বজ্রপাতে দুইটি পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুতে চলছে শোকের মাতম। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
আজ রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গোদারাঘাট এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা
হলেন, নালাদক্ষিণ গ্রামের মৃত হাজী মতিউর রহমান মতি মিয়ার মেয়ে মমতাজ
আক্তার (৩৭) ও তাঁর বোন জাকিয়া সুলতানা (২৩), এবং খোদেদাউদপুর গ্রামের সৌদি
প্রবাসী রাহিনুর ইসলামের ছেলে মো. রাসেদুল ইসলাম (২৩)।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অটোরিকশা চালক ছামাদ মিয়া ও বাবুল মিয়া। তাঁদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পরিবার
স‚ত্র জানায়, নিহত রাসেদুল ইসলাম ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর জাকিয়া
সুলতানা ২০১৫ ব্যাচের এসএসসি শিক্ষার্থী এবং মহাখালী হাসপাতাল থেকে
ডিপ্লোমা নার্সিং ও সনোলজিতে পড়াশোনা করেন।
পরিবার স‚ত্রে জানা গেছে,
রবিবার ছোট জাকিয়াকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার জগড়ারচরে কুয়েত প্রবাসী সফিকুল
ইসলামের স্ত্রী নিহত মমতাজ আক্তার বাবার বাড়ি থেকে ভবানীপুর গোদারাঘাট হয়ে
স্বামী বাড়ির যাচ্ছিলেন। অন্যদিকে, রাসেদুল ইসলাম বাঞ্ছারামপুরের উজানচর
থেকে নরসিংদী হয়ে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য একই স্থানে খেয়াঘাটে নৌকার অপেক্ষায়
ছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনজনই মারা যান এবং পাশে থাকা
অটোরিকশা চালক দুইজন আহত হোন। পরে
স্থানীয়রা দ্রæত তাঁদের উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে দেন। পরে তিনজনেরই পরিচয় শনাক্ত হয়।
নিহতদের
মধ্যে মমতাজ আক্তারের স্বামী কুয়েত প্রবাসী। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে
গেছেন। এ ঘটনায় হোমনা ও দুলালপুর ইউনিয়নের জগড়ারচর এলাকায় নেমে এসেছে শোকের
ছায়া।
নিহত রাসেদুলের চাচা মো. হারুন মিয়া বলেন, ভাতিজা সকালে ময়মনসিংহ
যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। বিকেলে খবর পাই ভবানীপুর খেয়াঘাটে বজ্রপাতে
সে মারা গেছে।
নিহত দুই বোনের আত্মীয় আক্তার হোসেন জানান, আল্লাহ
তাঁদের হায়াত এতটুকুই রেখেছিলেন। মমতাজের স্বামী কুয়েত থেকে রাতের ফ্লাইটে
দেশে ফিরলে আগামীকাল (সোমবার) জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দুই বোনই ছিলেন অত্যন্ত
পর্দাশীল। আল্লাহ তাঁদের জান্নাত নসিব করুন।
হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, বজ্রপাতে অজ্ঞান
অবস্থায় রাসেদুল নামে এক যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়,
তিনি আগেই মারা গেছেন।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
রফিকুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে
গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
