কুমিল্লার
চান্দিনা অংশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজনে তীব্র শীতের মধ্যে প্রায় ৪
মাস বসবাস করছিলেন অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বৃদ্ধ। দীর্ঘদিন যাবৎ গোসল না থাকা
অবস্থায় খাওয়া-দাওয়া মল-মূত্র ত্যাগও করতেন একই জায়গায়। তাঁর শরীর থেকে
ছড়াচ্ছে প্রচন্ড দুর্গন্ধ। মারাত্নাক অসুস্থ হওয়ায় হাটা-চলা থাক দূরের কথা
ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন তিনি। পথচারীদের দেওয়া খাবার খেয়ে কোন রকমে বেঁচে
আছেন ওই বৃদ্ধ। জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় এমন তথ্য ভিত্তিক
সংবাদটি প্রকাশিত হলে নজরে আসে প্রশাসনের।
পরে সেই সংবাদের সূত্র ধরে গত
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)
নাজিয়া হোসেন দ্রুত অজ্ঞাত পরিচয়ের বৃদ্ধ লোকটিকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
চান্দিনা উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকার দু’দিন পর মঙ্গলবার বৃদ্ধকে দেখতে ও
চিকিৎসা সেবার খোঁজখবর নিতে পুনঃরায় হাসপাতালে আসেন ইউএনও নাজিয়া হোসেন।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখা যায়,
পরুষ ওয়ার্ডে শুয়ে আছেন বৃদ্ধ। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। তবে বর্তমানে
কিছুটা কথা বলতে পারছেন। অসহায় বৃদ্ধের সার্বিক সহযোগিতা করছেন উপজেলা
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্মীরা।
এই বিষয়ে উপজেলা
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান জানান- মহাসড়কের
বিভাজন থেকে অসুস্থ অবস্থায় বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন (ইউএনও) ভর্তি
করানোর পর ওই রোগীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকার কোনো লোক ছিল না। ওই বৃদ্ধকে
ইউএনও স্যার এর রেফারেন্সে ভর্তি করানো হয়। তবে আমাদের পক্ষ থেকে হাসপাতালে
চিকিৎসা সেবার কোন কমতি নেই। বর্তমানে বৃদ্ধ লোকটি অনেকটাই সুস্থ্য। তিনি
নানা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
এবিষয়ে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী
অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন বলেন- বৃদ্ধ লোকটির সার্বিক অবস্থা আগরে চেয়ে
অনেকটাই ভালো। তাঁর চিকিৎসা চলছে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার
আন্তরিকতায় স্বতঃস্ফূর্ত সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যেহেতু তিনি আগের তুলানায়
কিছুটা কথা বলতে পারছেন, আশা করি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সুস্থ্য হয়ে
সম্পূর্ণভাবে কথা বলতে পারবেন। তিনি সুস্থ্য না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা
চলবে। তাঁর পরিবারের সন্ধান নিশ্চিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।