নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ
জাকির হোসেনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা-পুলিশের কাছে
সোপর্দ করা হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর
হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ
জাকির হোসেন। এ জন্য তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র জানায়, জাকির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ছিলেন। সোমবার
বিকেলে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রক্টরের দপ্তরে নিয়ে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রশাসনিক
কর্মকর্তারা প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এরপর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা,
প্রক্টর এবং শিক্ষার্থীদের সহায়তায় জাকিরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আন্দোলন
চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা,
ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ
মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি
বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. শাখাওয়াত হোসেন। এ মামলায় ৩৫ জনের নাম
উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটিতে ১১ নম্বর
আসামি করা হয় জাকির হোসেনকে। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছিল
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনকে। মামলার আসামি হলেও
জাকির হোসেন এত দিন নিয়মিত কার্যালয়ে এসেছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক হোসেন মজুমদার বলেন,
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তাঁকে (জাকির) বলেছেন পুলিশের কাছে
আত্মসমর্পণ করতে। একটা পর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডিসহ সবাই মিলে প্রশাসনের সবার
সঙ্গে কথা বলে তাঁকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের অনুরোধ করি। অনুরোধের পর
তিনি স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর
মো. আবদুল হাকিম বলেন, ‘অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ জাকির হোসেন আমার
দপ্তরে আসেন। তাঁর নামে মামলা থাকায় সবার সঙ্গে আলোচনার পর তিনি নিজেই বলেন
তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে। পরে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে গেছেন।’
এর
আগে রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ
কর্মী অর্ণব সিংহ রায়কে মারধর করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছিল। অর্ণব সিংহ রায়
একই মামলার ১২ নম্বর আসামি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ
মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে আটক করে নিয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট পরবর্তী
একটি মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে।
কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ করিম খান জানান, মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে ডিবি
হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে
হাজির করা হবে।