বৈষম্য
বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগষ্ট দেবিদ্বারে আবদুরর রাজ্জাক রুবেল হত্যা
মামলাসহ আরও কয়েকটি মামলায় আসামী হয়ে পলাতক রয়েছেন রাজামেহার ইউনিয়ন
চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন সরকার। এতে পরিষদের কাজে অচলাবস্থা বিরাজ
করছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান পদ রক্ষা করতে ওই চেয়ারম্যান
ভূয়া মেডিকেল সনদের মাধ্যমে অসুস্থতার কথা বলে ৩ মাসের ছুটিতে চলে গেছেন।
গোপনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন নিজের পছন্দের নজরুল
ইসলাম নামের এক সদস্যকে। এতে আপত্তি জানিয়েছে পরিষদের অন্য সদস্যরা।
পরিষদের জরুরী সেবা কাজে ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিকোড কয়েক হাজার লোক।
এদিকে
পরিষদের সদস্যরা নতুন প্যানেল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের কাজ সচল রাখার
দাবি জানিয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে
অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ আগষ্ট সরকার
পতনের পর সারা দেশের ন্যায় দেবিদ্বার উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও জনতার
আন্দোলনের সময় হতাহতের কয়েকটি ঘটনা ঘটে। দায়ের করা হয় একাধিক মামলা। এসব
ঘটনায় রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিনকে রুবেল হত্যা
মামলাসহ আরও একাধিক মামলায় আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেফতার
এড়াতে ওই চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে গেছেন।
অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন
ইউপি সদস্য মো. নবী হোসেন, রফিকুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম ও
ইয়াসমিন আক্তার। তারা বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কর্মস্থলে অনুপস্থিত
চেয়ারম্যানদের অপসারণ করার কথা। তবে চেয়ারম্যান জসিম ভুয়া মেডিকেল সনদ
দাখিল করে তিন মাসের ছুটি নিয়ে আত্মগোপনে আছেন। সদস্যরা আরও অভিযোগ করেছেন,
ওই চেয়ারম্যান তার পছন্দের মেম্বার এবং একাধিক মামলার আসামী মো. নজরুল
ইসলামকে গোপনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু
চেয়ারম্যানের এমন সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে অন্য সদস্যরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তাই জসিম চেয়ারম্যানকে অপসারণসহ নতুন করে চেয়ারম্যান প্যানেল তৈরী পূর্বক
দায়িত্ব প্রদানের দাবি জানানো হয়। তারা আরও বলেন, জসিম চেয়ারম্যানের সকল
অপকর্মের হোতা নজরুল ইসলামকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে পরিষদের সদস্যরা
মেনে নেয়ার কথা নয়। এদিকে পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা
থেকে প্রতিদিন জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ইত্যাদি
জরুরী সেবার জন্য এসে লোকজন ফিরে যাচ্ছে। এতে জনগণ সীমাহীন ভোগান্তিতে
পড়েছেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে
দেবিদ্বার সদরে, আমি সেখানে না গেলেও হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমি
সত্যই অসুস্থ্য। হার্টে দুটি রিং বসানো এটা সবায় জানে। তাই চিকিৎসকের
পরামর্শে ৩ মাসের ছুটিতে আছি। পরিষদের কাজ সচল রাখতে এখন উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা যা ভালো মনে করেন করবেন। আমি আর কি বলবো।’
মঙ্গলবার বিকালে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিগার সুলতানা বলেন, ‘পরিষদের কয়েকজন সদস্য লিখিত
অভিযোগ করেছেন। তারা প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন দায়িত্ব চান। কিন্তু
সবায় চায় চেয়ারম্যান হতে, তাই বুধবার তারা (সদস্যরা) ঐক্যমতে না আসলে গোপন
ভোটে একজনকে দায়িত্ব দেয়া হবে। পরিষদ তো সচল রাখতে হবে।’